কালো বলে ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারকে খুন, মার্কিন নৌ সেনা অফিসারের তিনটি যাবজ্জীবন


স্ত্রীর সঙ্গে শ্রীনিবাস কুচিভোটলা।

কোনও অপরাধ নেই, অভিযোগ নেই। শুধু গায়ের রঙ কালো বলেই এক জনকে খুন করেছিল। গুলি করেছিল অন্য জনকে। আদালতে 'গর্ব' করে সেকথা স্বীকারও করেছে খুনি। তার পরই ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার শ্রীনিবাস কুচিভোটলার খুনি মার্কিন নৌসেনা অফিসারকে তিন তিনটি যাবজ্জীবনের সাজা দিল কানসাসের আদালত। তিনটি সাজাই এক সঙ্গে চলবে।

২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কানসাসের একটি পাবে শ্রীনিবাসের সঙ্গে সামান্য বচসা হয় মার্কিন নৌসেনা অফিসার অ্যাডাম পিউরিনটনের। তার এক সপ্তাহ পর ওই পাবেই শ্রীনিবাসকে এবং অলোক মাদাসানিকে খুনের চেষ্টা করে সে। শ্রীনিবাসের মৃত্যু হলেও প্রাণে বেঁচে যান মাদাসানি। পালানোর বাধা দেওয়ায় আরও একজনকে গুলি করে পিউরিনটন।

সেই খুন এবং খুনের চেষ্টার মামলাতেই তিনটি যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছেন কানসাস আদালতের বিচারক। রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস বলেন, ''শুধুমাত্র বর্ণবিদ্বেষ, জাতি, ধর্ম বা নাগরিকত্বের ভিত্তিতে কাউকে পূর্ব পরিকল্পনা মতো খুন করা হয়েছে। তার জেরে একটি প্রতিশ্রুতিমান ইঞ্জিনিয়ারের জীবন শেষ হয়ে গিয়েছে। অন্যদের জীবনে নেমে এসেছে নানা সমস্যা।

অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, একজনকে খুন এবং দু'জনকেখুনের পরও আসামির কোনও অনুতাপ ছিল না। বরং আদালতেও সে বলেছে, ''হ্যা, শুধুমাত্র কালো চামড়া এবং ভারতীয় নাগরিক হওয়ার কারণেই শ্রীনিবাসকে খুন করেছি।''

আদালতে পেশ করা তথ্যপ্রমাণে উঠে এসেছে, ঘটনার দিন ২২ ফেব্রুয়ারি ওই পাবে গিয়ে কুচিভোটলা ও মাদাসানির কাছে গিয়ে বসে বছর বাহান্নর পিউরিনটন। দু'জনকে ভারতীয়, কালো চামড়া, জঙ্গি এইসব বলে সম্বোধন করে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। এরপর সেমি অটোমেটেড পিস্তল থেকে পরপর আটটি গুলি চালায় পিউরিনটন। বলতে থাকে, ''এটা আমার দেশ। এখান থেকে তোমরা চলে যাও।'' বুকে চারটি গুলি লাগায় ঘটনাস্থলেই মারা যান শ্রীনিবাস। তবে প্রাণে বেঁচে যান মাদাসানি।

হোয়াটসঅ্যাপে, আত্মঘাতী কিশোরী
চূড়ান্ত শুনানিতে মৃত বা আহতদের পরিবারের কেউ আদালতে হাজির ছিলেন না। তবে শ্রীনিবাসের স্ত্রী একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী সকলকে শ্রদ্ধা করেন। এমনকি, ঘটনার সময়ও পিউরিনটনকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, সব কালো চামড়ার লোকই খারাপ নন। তাঁরা বরং আমেরিকার উন্নয়ন অগ্রগতিতেই সাহায্য করছেন। কিন্তু তার পরেও তাঁর করুণ পরিণতি।