বাবা ইলেকট্রিশিয়ান, ছেলে পেলেন ৭০ লক্ষের চাকরি


নয়াদিল্লি: মেধার কোনও জাত হয় না, ধর্ম হয় না, থাকে না কোনও অর্থনৈতিক ভেদাভেদ। পড়াশোনা আর জ্ঞানের প্রতি আগ্রহই শেষ কথা বলে। মেধার ক্ষেত্রে তাই 'পিছিয়ে পড়া' বলে কিছু হয় না। আর সেই মেধাতেই জিতে গেলেন এক ইলেক্ট্রিশিয়ানের ছেলে।

ভারতে নয়, একেবারে মার্কিন মুলুকে মোটা মাইনের চাকরি পেলেন মহম্মদ আমির আলি। প্যাকেজের অঙ্ক শুনলে চোখ কপালে উঠবে বইকি। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ওই ছাত্রের বার্ষিক প্যাকেজ ১ লক্ষ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। তাঁর বাবা পেশায় একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান।

স্কুলের বোর্ডের পরীক্ষায় ভালই ফল করেছিলেন মহম্মদ আমির আলি। কিন্তু জামিয়া মিলিয়ায় বি টেক কোর্স পাশ করতে পারেননি। টাকার অভাবে ঝাড়খণ্ড এনআইটি-তে সুযোগ পেয়েও পড়তে পারেননি আর্কিটেকচার কোর্স। ২০১৫ তে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমার জন্য ভর্তি হন তিনি।

সেখানেই এই মহম্মদ আমির আলি এক বিশেষ থিয়োরি প্রকাশ করেন। ইলেকট্রিক ভেইকল চার্জ দেওয়ার পন্থা আবিষ্কার করেন তিনি। তাঁর মতে, এই ইলেকট্রিক কার চার্জ করা ভারতের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তাঁর দাবি, ওই থিয়োরি সফল হলে, চার্জিং-এর খরচ শূন্যতে নেমে আসবে। তাঁর এই থিয়োরির কথা জানালে, তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন অধ্যাপক ওয়াকার আলম। এরপরই সেই থিয়োরি জামিয়া মিলিয়ায় প্রদর্শিত হয়।

এরপরই আলির ওই প্রজেক্ট প্রোমোট করা ঝয়। জামিয়া মিলিয়া ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয় সেই প্রজেক্ট। এরপরই ওই প্রকল্পে নজর কাড়ে নর্থ ক্যারোলিনার শার্লটের অটোমোবাইল সংস্থা 'ফ্রিসন মোটর রেকস। সেখান থেকেই আলির কাছে আসে লোভনীয় চাকরির অফার। ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার পদের জন্য ওই অফার আসে।

স্বাভাবিকভাবেই ছেলের এই সাফল্যে খুশি বাবা শামশাদ আলি। তিনি বলেন, ছেলেবেলা থেকেই ইলেট্রনিক্সে বিশেষ আগ্রহ ছিল আলির। বাবাকে নানা ধরনের প্রশ্ন করত সে। যদিও সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সবসময় সম্ভব হত না ইলেকট্রিশিয়ার শামসাদের পক্ষে। এখন ছেলে ক্রমশ এগিয়ে যাক, একটাই কামনা বাবার।