ওঝায় ভরসা! সাপের কামড়ে মৃত্যু বাবা ও মেয়ের


বহরমপুর: ঘুমের মধ্যে বিষধর সাপের কামড় বাবা ও দেড় বছরের এক শিশুকে৷ প্রাণ বাঁচাতে ওঝার দ্বারস্থ হলেও কোনও লাভ হয় না৷ পরে অবস্থা বেগতিক বুঝলে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের৷ কিন্তু ততক্ষণে পরিস্থিতি হাতের বাইরে৷ মঙ্গলবার এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের রাণীদিঘী এলাকায়৷

স্থানীয় সূত্রে খবর, নবগ্রামের রাণীদিঘী এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর শেখ (২২) ও তাঁর দেড় বছরের মেয়ে মাবশুরা খাতুন৷ এদিন ভোররাতে ঘুমের সময় তাদের ঘরে একটি বিষধর সাপ ঢোকে৷ তখনই জাহাঙ্গীর ও তাঁর দেড় বছরের কন্যা সন্তানকে সাপটি ছোবল মারে বলে পরিবারের অনুমান৷ তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টায় প্রথমে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু সেই ওঝার ঝাড়ফুঁকে কোনও কাজ হয় না৷ বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হতে শুরু করে৷ ক্রমশ জাহাঙ্গীরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে৷

পরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয় জাহাঙ্গীরকে৷ অন্যদিকে তখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিল ছোট্ট দেড় বছরের মাবশুরা৷ তবে কয়েক ঘণ্টা কাটার পর মাবশুরারও শারীরিক অবনতি হতে থাকে৷ পরে তাকেও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ হাসপাতালে থাকার পর সেখানেই প্রথমে জাহাঙ্গীরের ও পরে মাবশুরার মৃত্যু হয়৷ ইদের দিনে এমন ঘটনায় গোটা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া৷

প্রসঙ্গত, সাপে কামড়ালে ওঝাই ভরসা এই ভুল ধারণায় বাস করে গ্রাম-গঞ্জের সিংহভাগ মানুষ৷ চিকিৎসকদের তরফে হাজার সচেতনতা বার্তা প্রচারেও লাভ হয়নি কিছুই৷ কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাসকে আপন করে রেখেছে গ্রামের মানুষেরা৷ এই ওঝা গুনিনের ব্যাপারে চিকিৎসকরা বারেবারে জানিয়ে এসেছেন, সাপে কামড়ানো মানুষদের সবার প্রথম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার৷ কেননা এই ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা যত দ্রুত রোগীকে দেওয়া যাবে তত দ্রুতই প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা রোগীর৷ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে সচেতন শিবিরও করা হয়৷ চিকিৎসকদের দাবি, মানুষ সচেতন হলে এই সব কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।