বিহার ধর্ষণ কাণ্ড: ৭ প্রশাসনিক আধিকারিককে সাসপেন্ড করলেন রাজ্যপাল


পাটনা : সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বা সামাজিক উন্নয়ন বিভাগ থেকে ৭ আধিকারিককে সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করলেন বিহারের রাজ্যপাল সত্য পাল মালিক৷ শনিবার এই সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল৷ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মুজফফরপুর হোম ধর্ষণ কাণ্ডের তথ্য যে সংস্থা প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিল, সেই সংস্থার রিপোর্টকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি৷ সময়মতো তা প্রকাশ করলে আরও আগে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া সম্ভব হত৷

রাজ্যপালের দাবি হোম সম্পর্কে বিস্তারিত অডিট রিপোর্ট পেয়েছিল ওই সব আধিকারিকরা৷ কিন্তু তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি৷ কোনও তদন্তও শুরু করা হয়নি৷ ফলে পিছিয়ে গিয়েছে গোটা প্রক্রিয়া৷ নিজের চিঠিতে রাজ্যপাল সত্য পাল মালিক বলেছেন ২৬ শে মে ওই সব অভিযুক্ত আধিকারিককে রাজ্য স্তরের বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয় তদন্ত শুরু করার জন্য৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ নেননি তারা৷ কেন এই গাফিলতি, তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাদের৷ সেই সব আধিকারিকরা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন৷ এরপরেই তাদের বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল৷
 
এই অভিযুক্ত আধিকারিকরা হলেন, দেবেশ কুমার, ঘনশ্যাম রবিদাস, মধুবানি কুমার, সত্যকাম, অলোক রঞ্জন, গীতাঞ্জলি প্রসাদ ও সীমা কুমারি৷ এদের প্রত্যেকের কাছে বহিস্কারের চিঠি পৌঁছে গিয়েছে৷ ইতিমধ্যে সামাজিক উন্নয়ন দফতরে নতুন আট অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে৷ তারা হলেন রশ্মি কুমারি, কবীর, রেখা কুমারি, রেশমি ভার্মা, অর্চনা কুমারি, ললিতা কুমারি, প্রতিভা কুমারি ও অক্ষয় রঞ্জন৷

এদিকে, এরআগে, কেন্দ্র ও বিহার রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই ইস্যুতে জবাব চেয়ে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট৷ গত জুলাই মাসেই প্রকাশ্যে আসে বিহারের মুজফফরপুর হোমের ভয়াবহ চিত্র৷ ৪০ জন নাবালিকাকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়৷ জানা যায়, নাবালিকাদের নগ্ন অবস্থায় শুতে বাধ্য করতেন শিক্ষিকা। এক নাবালিকাকে খুন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। দেহ খুঁজতে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত শিক্ষিকা কিরণ নিজেও নগ্ন হয়ে ঘুমোতেন, পাশে থাকত ৩-৪ জন নাবালিকা। উদ্ধারের পর এক নাবালিকা জানিয়েছে, মৃত ছাত্রীদের দেহ মাটির তলায় পুঁতে দেওয়া হত। এরপরই নতুন করে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

মাসখানেক আগে ওই হোমের যৌন হেনস্থার চিত্র সামনে আসে। একটি এনজিও সেই তথ্য জানতে পেরে প্রকাশ্যে আনে পুরো বিষয়টি। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১০ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাবালিকাদের সবাইকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্য জায়গায়।