কসবার হোটেলে ঘাঁটি গেড়েই শহরজুড়ে এটিএম জালিয়াতির ব্লুপ্রিন্ট আঁকে হ্যাকাররা

ধৃত ২ রুমানিয়ান নাগরিককে জেরা করে দিল্লির হউজ খাসে এটিএম চক্রের আরও একটি আস্তানার খোঁজ মিলেছে।


কলকাতায় এটিএম জালিয়াতিতে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। দিল্লিতে ধৃত ২ রুমানিয়ান নাগরিকের মধ্যে একজন টানা এক সপ্তাহ কলকাতায় কসবার একটি হোটেলে ঘাঁটি গেড়েছিল। শুক্রবার দিল্লির বসন্ত বিহার থেকে জালিয়াত কাণ্ডে অভিযুক্ত ২ রুমানিয়ান নাগরিককে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিসের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম। ধৃতদের জেরা করেই কসবার ওই হোটেলের সন্ধান মেলে।

জানা গেছে, অ্যাক্রোপলিশ মলের থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে কসবার প্রান্তিক পল্লিতে অবস্থিত এই ৪ তারা হোটেলটি। ৩০ এপ্রিল থেকে ৭ মে, ওই অভিজাত হোটেলেই আস্তানা গেড়েছিল ধৃত রুমানিয়ান নাগরিক। ওই হোটেলে থেকেই তৈরি হয় শহরজুড়ে এটিএম জালিয়াতির ব্লুপ্রিন্ট। ইতিমধ্যেই ওই হোটেলের সিসিটিভির হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছে লালবাজার গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা। হোটেলের ম্যানেজার জানিয়েছেন, পুলিস তাদের কাছ থেকে ওই রুমানিয়ান নাগরিকের হোটেলে চেক-ইন, চেক-আউট সংক্রান্ত সবরকম তথ্য চায়। সেইসময়স্ত তথ্যই পুলিসকে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ধৃত রুমানিয়ান নাগরিকের পাসপোর্ট, ভিসার তথ্যও পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিস। ৩০ এপ্রিল থেকে ৭ মে- এই এক সপ্তাহ সময়কালে কে বা কারা কারা ওই রুমানিয়ান নাগরিকের সঙ্গে দেখা করতে আসে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তার খোঁজ শুরু করেছে পুলিস। ইতিমধ্যেই বসন্ত বিহারে ধৃত ২ রুমানিয়ান নাগরিককে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। লালবাজারে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ধৃত ২ রুমানিয়ান নাগরিককে জেরা করেই দিল্লিতে এটিএম চক্রের আরও একটি আস্তানার খোঁজ মিলেছে। তাদের দেওয়া সূত্রের ভিত্তিতেই শুক্রবার রাতভর দিল্লির হউজ খাসে একটি বহুতলে তল্লাশি চালায় কলকাতা পুলিসের দল। জানা গেছে, এই বহুতলে ৩ মাস ধরে ভাড়া ছিল ৩ জালিয়াত। যার মধ্যে ২ জন রুমানিয়ান নাগরিক। তবে পুলিস আসার খবর পেয়েই তারা পালিয়ে যায়। ওই বহুতল থেকে বেশকিছু  নথি, পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে মাইক্রোচিপ ও স্কিমার মেশিনও।

উল্লেখ্য, শুক্রবার বসন্ত বিহারের বাড়িটি থেকেও ২০টি নকল এটিএম কার্ড বা ক্লোন কার্ড উদ্ধার করে পুলিস। উদ্ধার হয় এটিএম কার্ডে ব্যবহার হওয়া ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ এবং মুখোশও। এই মুখোশগুলি পরেই এটিএম-এ ঢুকত হ্যাকারের দল। দিল্লির বেশ কয়েকটি এটিএম-এর সিসিটিভি ফুটেজ ও কলকাতার কয়েকটি এটিএম-এর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই অভিযুক্তদের শনাক্ত করে পুলিস। এটিএম জালিয়াতির গোটা চক্রটি-ই বিদেশ থেকে চালনা করা হত বলে নিশ্চিত তদন্তকারী অফিসাররা।