রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া হত, সকালে ঝড়ত চোখের জল - দেওরিয়ার কিশোরী জানাল নারকীয় অভিজ্ঞতা


রাত্রিবেলা সাদা, কালো বা লাল রঙের গাড়ি এসে মেয়েদের নিয়ে যেত। ভোরে যখন তারা ফিরত, তাদের চোখ দিয়ে শুধুই জল পড়ত। এমন ভয়ানক তথ্যই জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ার শেল্টার হোম থেকে পালিয়ে আসা ১০ বছরের কিশোরীটি। সে পালিয়ে আসাতেই ফাঁস হয়েছে শেল্টার হোমের মেয়েদের দিয়ে চালানো হত মধুচক্রের ব্যবসা!

দেওরিয়ার এই শেল্টার হোমটি চালাত গিরিজা ও মোহন ত্রিপাঠি নামে এক দম্পতি। রবিবার শেল্টার হোমটি থেকে পালিয়ে আসে ওই ১০ বছরের মেয়েটি। পুলিশের কাছে জানায় কিভাবে শেল্টার হোমের আশ্রিতাদের জোর করে যৌনপেশায় বাধ্য করা হয়। এরপরই ওই হোমে হানা দিয়ে পুলিশ উদ্ধার করে ২৪ জন মেয়েকে। তবে আরও ১৮ জনের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। গিরিজা ও মোহনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
 
উদ্ধার হওয়া মেয়েরা জানিয়েছে তাদের উপর নিয়মিত যৌন ও শারীরিক নিগ্রহ চলত। তবে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন বাইরে থেকে দেখে কিছু বোঝার উপায় ছিল না। ৮ বছর আগে একটি এনজিও গঠন করে হোমটি শুরু করেছিল গিরিজা ও মোহন। এলাকাবাসী জানিয়েছে অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের ব্যাপক উন্নতি তাদের চোখে লেগেছিল ঠিকই কিন্তু ওই হোমে প্রায়ই পুলিশ আসত বলে কোনও সন্দেহ তাদের হয়নি।

হোমটি রেলস্টেশনের বেশ কাছেই শহরের একটি ব্যস্ত রাস্তায় অবস্থিত। কাছাকাছির মধ্যে অনেকগুলি হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে। তবে সেই ব্যস্ত রাস্তাতেও হোমের ভবনটির দরজার সামনে প্রায়ই গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। স্থানীয় এক বিজেপি নেতা বলেছেন, তাঁদের ধারণা ছিল গিরিজার স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারণে অনেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন।

তবে হোমটিতে যে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে না তা কিন্তু রাঝ্য সরকার আগেই জানতে পেরেছিল। বেশ কিছু অব্যবস্থার জন্য রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যান দপ্তর ২০১৭ সালের জুন মাসেই হোমের লাইসেন্স বাতিল করে। জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল হোমের মেয়েদের সেখান থেকে সরিয়ে তাদের যথাযথ জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তা কার্যকর করা হয়নি।