বিজয় মালিয়ার জেলের ভিডিও দেখানো হল আদালতকে


একঝলকে দেখলে হয়ত মনে হতেই পারে কোনও সিনেমার ফ্লোরে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু আসলে তা নয়। মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলে ফেরার ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়ার কারাগার। তা এমন শৌখিনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা দেখে এটা আদৌও কোনও জেল কিনা তা সন্দেহ হতে পারে। টিভি থেকে শুরু করে পৃথক শৌচালয়, বিছানা, রয়েছে পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর ব্যবস্থাও। লন্ডন থেকে এই ফেরার ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করতে রীতিমতো মরিযা সিবিআই। আর তাই লন্ডনের আদালতে ৬–৮ মিনিটের একটি ভিডিও পেশ  করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সেই ভিডিওতেই জেলের ভেতরের এই সুযোগ–সুবিধা দেখানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর দেশে ফেরার ব্যাপারে তুমুল আপত্তি তুলেছিলেন বিজয় মালিয়া। তিনি জানিয়েছিলেন,  ভারতের জেল গুলির অবস্থা মোটেও ভাল নয়। সেখানে থাকা খুব কষ্টকর। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভারতীয় জেলে পর্যাপ্ত সৌরআলো এবং প্রাকৃতিক হাওয়ার ব্যবস্থা নেই। লন্ডন আদালতের বিচারক ভারতকে তাই যেখানে বিজয় মালিয়াকে রাখা হবে সেই কারাগারের ভিডিও করে দেখানোর নির্দেশ দেয়। আর তাই  জেলের মধ্যেই 'স্বাস্থ্যকর' পরিবেশ তৈরির ব্যবস্থা করে সেটার ভিডিও আদালতকে দেখানো হল। সিবিআইয়ের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, '‌আদালত আমাদের কাছে দেখতে চেয়েছিল আদৌও ভারতীয় জেল স্বাস্থ্যকর কিনা?‌ আমরা প্রমাণ করেছি ভারতীয় জেল যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর এবং সেখানে চিকিৎসা ব্যবস্থাও যথাযথ রয়েছে। এমনকী যে সেলে বিজয় মালিয়াকে রাখা হবে তা পূর্বদিকে অবস্থিত। তাই সেখানে পর্যাপ্ত আলো রয়েছে।'‌ তিনি আরও বলেন, '‌সেলে ভেন্টিলেশনের সঙ্গে রয়েছে জানলা। উন্মুক্ত জায়গাতেই রয়েছে বিজয় মালিয়ার সেলটি।'‌

আরও জানা গিয়েছে  সময় কাটাতে জেলের গ্রন্থাগারেও যেতে পারবেন মালিয়া। তাছাড়া নিরাপত্তায় যাতে কোনও ফাঁক না থাকে সেটাও দেখছে কারা প্রশাসন। জেলের  সব জায়গায় সিসিটিভি আছে। কারারক্ষীরা ২৪ ঘণ্টাই নজরদারি করছে সেখানে। নিরাপত্তা প্রশ্নে শতভাগ নিশ্চিত হতে বিশেষ অডিটও করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাকে চারবেলা খাবার দেওয়া হবে। সেই খাবারের গুণগত মানও যথেষ্ট ভাল।' আর্থার রোড জেলের ব্যারাক নম্বর ১২–তে হাই–প্রোফাইল বন্দিদের রাখা হয়। ফেরার বিজয় মালিয়াকে সেখানেই রাখা হবে।

ব্যাঙ্কের ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ ফেরত না দিয়ে ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ভারত ছেড়ে লন্ডনে চলে যান বিজয় মালিয়া। এরপর থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করতে উঠেপড়ে লেগেছে সিবিআই। ১২ সেপ্টেম্বর লন্ডন আদালতে এই দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।