ফ্যালোপিয়ান টিউবে ৪ কেজি টিউমার, বাঁচাল এনআরএস


ডিম্বাশয়জুড়ে শুধু নয়, ফ্যালোপিয়ান টিউব পেঁচিয়ে রক্ত সরবরাহ বন্ধ ছিল ২০ সেন্টিমিটার লম্বা সাড়ে চার কেজি ওজনের টিউমারের চাপে। জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের পর সম্পূর্ণ সুস্থ করে রোগীকে ‌বাড়ি ফেরালেন এনআরএসের চিকিৎসকরা। বছর কুড়ির সাজেদা বেগম পেটে অসহ্য যন্ত্রণা, খাওয়া–দাওয়া দূর অস্ত, শুধু বমি সঙ্গে মারাত্মক কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ২ আগষ্ট। হাওড়ার খলিয়ার এই বাসিন্দা প্রথমে উলুবেড়িয়ার এক নার্সিংহোমে ভর্তি হন ৩১ জুলাই। সেখানে সুরাহা না পাওয়ায় তড়িঘড়ি আসেন এনআরএসে। প্রথমে প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকরা তাঁকে দেখার পর মনে করেন, বড় সিস্ট রয়েছে যা তলপেটের নিচের হাড় থেকে পেটের ওপরের অংশ পর্যন্ত জুড়েছিল। বড় সিস্ট ফুলে থাকলে অন্ত্রে চাপ পড়ে। যে কারণে মলত্যাগের রাস্তা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছিল। আরও খুঁটিয়ে দেখতে রেফার করা হয় জেনারেল সার্জারি বিভাগে। রোগীর পেটের যন্ত্রণা ক্রমশ বাড়লে ৫ আগষ্ট, রবিবার জরুরি ভিত্তিতে রোগীর অস্ত্রোপচার করেন জেনারেল সার্জারি বিভাগের ইউনিট ফাইভের চিকিৎসকরা। যার প্রধান অধ্যাপক ডাঃ সৌগত সামন্ত। ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার নির্বিঘ্নে কোনও জটিলতা ছাড়াই সম্পন্ন হয়। 
জেনারেল সার্জারি বিভাগের আরএমও ডাঃ অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন, '‌রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য তো ছিলই, তার সঙ্গে ছিল পেরিটোনাইটিস অর্থাৎ খাদ্যনালির ওপর পাতলা পর্দার মতো একটা আস্তরণ দিয়ে ঢাকা থাকে, যাকে পেরিটোনিয়াম বলে। সেখানে কোনওরকম প্রদাহ জমে ফুলে ইটের মতো শক্ত হয়ে যায়। যে কারণে সাজেদার তলপেট শক্ত ছিল। পেট কেটে ভেতরের অবস্থা জানতে এক্সপ্লোরেটরি ল্যাপারোকটমি করতে গিয়ে দেখি ডানদিকের ডিম্বাশয় থেকে টিউমার বড় হয়ে ফ্যালোপিয়ান টিউবে চেপে পেচিয়েছিল। ফলে রক্তসঞ্চালন ঠিকমতো না হওয়ায় সেখানে কালো হয়ে পচন ধরতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, বাঁদিকের ডিম্বাশয়ের কাছে চলে এসে জরায়ু মুখেও টিউমারটি চেপেছিল। ওভারিতে রক্ত সংবহনকারী শিরাগুলির মুখও প্রায় বন্ধ হয়েছিল। ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ টিউমার ছাড়িয়ে কেটে বাদ দিই। রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ আগস্ট।'‌  সাজেদা বলেন,'‌এখন আগের থেকে ভাল আছি। পেটের ডানদিকের যন্ত্রণাও কমেছে।'‌‌‌