বিয়ে আটকানোর পরদিনই আত্মঘাতী নাবালিকা


পটাশপুর: নাবালিকা মেয়ে৷ পাড়ার লোকজন তাই বিয়ে রুখে দিয়েছিলেন৷ হাতের শাঁখা, পলা খুলে নিয়েছিল মেয়ের হাত থেকে৷ পরদিনই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করল সেই নাবালিকা৷ পূর্বমেদিনীপুর জেলার পটাশপুর থানার পীতাম্বরপুর এলাকার ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় এক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল ওই কিশোরী৷ পাশের পাহাড়পুর গ্রামের বছর একুশের এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়৷ শুক্রবার ছিল বিয়ে৷ কিন্তু মেয়ে যে এখনও বিবাহ যোগ্য হয়ে ওঠেনি৷

অল্পবয়সী মেয়ের বিয়ে মানে হাজার বিপদ৷ শরীর, মন দুই'য়েই প্রভাব ফেলে এই বিয়ে৷ প্রশাসন বারবার সচেতন করে এই বিয়ে শুধু অনুচিৎই নয়, আইন বিরুদ্ধও বটে৷ পাত্র-পাত্রী তো বটেই পরিবারকেও আইনের কড়া কোপে পড়তে হতে পারে এর জন্য৷ নাবালিকার বিয়ে রোখার বহু ঘটনা ঘটেও৷ সরকারও কম প্রচার করছে না৷

তাতেই এলাকার মানুষ সচেতন হয়ে বিয়ের দিন পাত্রের বাড়িতে হাজির হন৷ রুখে দেন এই বিয়ে৷ মেয়ের হাতের শাঁখা পলাও খুলে দেন গ্রামবাসীরা৷ এরপর ছেলে ও মেয়ের অভিভাবকের কাছ থেকে কাগজে লিখিয়ে নেওয়া হয় আঠারো বছর হলে তবেই মেয়ের বিয়ে দেবেন৷

ঘটনার পরদিনই পাত্রীর নিথর দেহ উদ্ধার হয়৷ বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে বছর পনেরোর ওই কিশোরী৷ তবে এই ঘটনায় নাবালিকার মা-বাবার কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ প্রতিবেশীদের অনুমান, বিয়ে আটকানোটা সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি ওই কিশোরী৷ তার জেরে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে৷ তবে সমাজসচেতন মানুষরা বলছেন, প্রত্যেক অভিভাবকের প্রথম থেকেই উচিৎ সতর্ক হওয়া৷

বিবাহের বয়স না হলে মেয়ে কিংবা ছেলের বিয়ে ঠিক করাই উচিৎ নয়৷ সরকার তো প্রচুর প্রকল্প রেখেছে মেয়েদের জন্য৷ কন্যাশ্রী থেকে রূপশ্রী-রয়েছে সবরকম সহায়তা প্রকল্পই৷ তা হলে কেন কম বয়সে মেয়েকে ছাদনাতলায় পাঠিয়ে তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করা!