বোর্ড গঠন নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষ ইসলামপুরে, বোমায় নিহত ১


হিংসা: ইসলামপুরের পণ্ডিতপোতায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বোমাবাজিতে নিহত লাল মহম্মদ।


পঞ্চায়েত ভোট শেষ হয়ে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখনও হিংসার শেষ নেই ইসলামপুরে। শনিবার সকালে ইসলামপুর থানার পণ্ডিতপোতা-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে বোমার আঘাতে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম লাল মহম্মদ (৫০)। জখম অন্তত ৫। জখমদের মধ্যে পুলিশও রয়েছেন। ক'দিন আগেই ওই এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা ফেটে দুই শিশু মারাত্মক জখম হয়। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ তখন থেকে কড়া হাতে বিষয়টি মোকাবিলা করলে এমন ঘটত না।
১১ আসনের পণ্ডিতপোতা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬টি আসন জিতেছিল তৃণমূল, ৫টি নির্দল। সেই পাঁচ জনই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার পরেই পঞ্চায়েত প্রধানের পদ নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়। এ দিন সেখানে বোর্ড গঠনের সাধারণ সভা হওয়ার কথা ছিল। পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন এলাকায় দু'পক্ষের লোকজন জড়োও হয়। প্রাক্তন প্রধান সাবির আলমের পুত্রবধূ সঞ্জিতা নাজকে প্রধান করতে চায় এক পক্ষ। জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য জাভেদ আখতারের ঘনিষ্ঠরা আবার সঞ্জিতার বিরোধী। গোলমালের আশঙ্কা দেখে জেলা প্রশাসনই এ দিন বো়র্ড গঠন প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। ইসলামপুরের বিডিও শতদল দত্ত সে কথা জানিয়েও দেন।

তার পরেই শুরু হয় গোলমাল। পুলিশের সামনেই যথেচ্ছ বোমা-গুলি, ইট-পাথরে মুহূর্তে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। এর মধ্যেই বোমার আঘাতে লুটিয়ে পড়েন লাল মহম্মদ। গুরুতর আহত অবস্থায় ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বোমা ও গুলির আঘাতে জখমদের মধ্যে তিন জনকে ইসলামপুর ও এক জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। ঢিলের আঘাতে জখম হন এক পুলিশকর্মী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আচমকা বোমাবাজি শুরু হওয়ায় এবং তাঁদেরই এক জন জখম হওয়ায় তখন এলাকা ছাড়েন পুলিশকর্মীরা। তবে পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

নদিয়ার ভীমপুরে বাগবেড়িয়া পঞ্চায়েত অফিসের কাছে হাঁসুয়া ও তির-ধনুক নিয়ে হাজির দুষ্কৃতীরা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
যে বাড়ি থেকে বোমাবাজি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ, তার দরজা ভেঙে দু'জনকে আটক করে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, ''এখনও পর্যন্ত ন'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকা জুড়ে তল্লাশি চলছে।'' পুলিশের সামনেই কী ভাবে গোলমাল হল? পুলিশ সুপারের বক্তব্য, ''প্রয়োজন মতো পুলিশ ছিল। তবে দু'পক্ষের লোক অনেক বেশি থাকায় সমস্যা হয়েছে।''

স্থানীয় তৃণমূল নেতা জাভেদ আখতার বলেন, ''কিছু লোক আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে।'' পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তথা নির্দলের পক্ষে ফুল মহম্মদের পাল্টা অভিযোগ, ''জাভেদ আখতারের গাড়ি থেকেও বোমা নিয়ে হামলা করেছে দুষ্কৃতীরা। প্রশাসন বিষয়টি দেখুক।'' প্রাক্তন প্রধান সাবির আলমের দাবি, তাঁর বড় ছেলেও বোমায় আহত হয়েছেন।