ভারত থেকে আমেরিকায় পাচার ৩০০ শিশু!


মুম্বই পুলিশের জালে ধরা পড়ল এক আন্তর্জাতিক শিশু পাচার চক্রের মাথা। অন্তত ৩০০ জন শিশুকে এই চক্রটি ভারত থেকে আমেরিকায় পাচার করেছে। রাজুভাই গামলেওয়ালা নামে ওই ব্যক্তিকে গুজরাতের বাসিন্দা। ২০০৭ সাল থেকে সে এই চক্র চালিয়ে আসছে। প্রতিটি শিশুর জন্য মার্কিন ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হত। গত মার্চে প্রথম চক্রটির সন্ধান পেয়েছিল মুম্বই পুলিশ।

জানা গিয়েছে গামলেওয়ালা ও তাঁর স্যাঙাতরা কাজ করত মূলতঃ গুজরাতে। ১১ থেকে ১৬ বছররের নাবালক নাবালিকাদেরই পাচার করা হত। সেখানে তারা এমন দরীদ্র পরিবার খুঁজত, যাঁদের পক্ষে সন্তানদের মানুষ করাটা কঠিন। সেইসঙ্গে খোঁজা হত এমন কিছু পরিবারকে যাঁরা তাঁদের শিশুদের পাসপোর্ট ভাড়া দিতে রাজি আছেন। তারপর সেই পাসপোর্টের শিশুর মুখের সঙ্গে মিলিয়ে ওই দরীদ্র পরিবারগুলি থেকে বেছে নেওয়া হত শিশুদের।

গ্যাঙটির কিছু বাধাধরা কেরিয়ার ছিল যারা অর্থের বিনিময়ে ওই নকল পাসপোর্ট ব্যবহার করে ওই শিশুদের পৌঁছে দিত আমেরিকায়। তবে তার আগে পাসপোর্টের সঙ্গে শিশুটির আরও মিল আনার জন্য লাগানো হত মেক আপ। কেরিয়াররা শিশুদের ক্লায়েন্টদের হাতে তুলে দিয়ে ফিরে আসত নকল পাসপোর্টগুলি নিয়ে এবং তা ফিরিয়ে দেওয়া হত আসল মালিকদের কাছে।

শিশুদের মেকআপ করাতে গিয়েই গত মার্ট মাসে চক্রটি প্রথম পুলিশের নজরে আসে। এক কয়েকজন নাবালিকাকে একটটি সালোনে নিয়ে গিয়ে মেকআপ করানো হচ্ছে, বন্ধুর মারফত এই খবর জেনে সেখানে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী প্রীতি সুদ। তিনি ভেবেছিলেন তাদের যৌনপেশায় নামানো হচ্ছে। তিনি পুলিশে খবর দেন। তারপরই এই পাচার চক্রের কথা জানা গিয়েছিল।

সেই সময় এই চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে পুলিশের এক প্রাক্তন সাবইন্সপেক্টরের ছেলেও ছিল। পুলিশ জানিয়েছে সাগরেদ সঙ্গে গামলেওয়ালা একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখত। সেই নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশ তার খোঁজ পেয়েছে। এর আগে ২০০৭ সালে পাসপোর্ট জাল করার অপরাধে মুম্বইতেই সে ধরা পড়েছিল।

পুলিশের কাছে অবশ্য এখনও দুটি বিষয় স্পষ্ট নয়। প্রথমত, আমেরিকায় নিয়ে গিয়ে এই শিশুদের কী করা হয়েছে। দুই, আসল মালিক ছাড়াই ইমিগ্রেশনে ওই পাসপোর্টগুলিতে কিভাবে স্টাম্প মাড়ানো হত। গামলেওয়ালা ও তার সঙ্গীদের জেরা করে এইসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে।