কোরবানি ভুলে কেরলবাসীকে সাহায্য মুসলিমদের


নয়াদিল্লি: কোরবানির জন্য বরাদ্দ খরচ দান করা হোক কেরলের দুর্গতদের সাহায্যার্থে। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এমন অনেক পোস্ট দেখা গিয়েছে গত কয়েক দিন ধরে। যা নিয়ে তর্ক-বিতর্কও কিছু কম হয়নি।

এরই মাঝে প্রকাশ্যে এল চমকপ্রদ তথ্য। কেরলের বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য ধর্মীয় রেওয়াজ কোরবানি বাতিল করল মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। সেই অর্থ মজুত করা হল কেরলের বন্য কবলিত মানুষদের জন্য। আর তাতেই উঠে এল পাঁচ লক্ষ টাকা।

এই বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছিল মুসলিম সত্যসাধক মণ্ডল নামক একটি সংস্থা। ১৯৭০ সালে হামিদ দালওয়াই নামের একজন এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। যাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মুসলিম সমাজের উন্নয়ন এবং প্রগতি। সমাজের মুসলিমদের মধ্যে সচেতনতা এবং উন্নততর চিন্তাভাবনা গড়ে তুলতে নানাবিধ কর্মসূচী গ্রহণ করে এই সংস্থা। গত আট বছর ধরে কোরবানির ইদের দিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় এই সংস্থার পক্ষ থেকে।

চলতি বছরে রক্তদান শিবিরের সঙ্গে কেরলের দুর্গতদের জন্য ত্রাণ গ্রহণ করা হয়। এবং সেই অর্থ নেওয়া হয় কোরবানির জন্য বরাদ্দ থেকে। আর এই পথেই অল্প সময়ের মধ্যেই উঠেছে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। ধর্মের থেকেও যে মানবিকতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝিয়ে দিয়েছে মুসলিম সত্যসাধক মণ্ডল।

ওই সংস্থাটির পুনে শাখার সভাপতি সামসুদ্দিন তাম্বোলি জানিয়েছেন যে কোরবানির জন্য অনেকেই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করেন। সেই টাকা কেরলের বন্য দুর্গতদের সাহায্যার্থে দান করার আহ্বান জানানো হয়েছিল সাধারণের কাছে। কেরলবাসীর কাছে ওই অর্থ যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝানো হয়েছিল মুসলিম সত্যসাধক মণ্ডলের পক্ষ থেকে। তাতেই মিলেছে সাফল্য। সামসুদ্দিন তাম্বোলির মতে, "কোরবানির অর্থ হচ্ছে ত্যাগ। সেই ত্যাগ অর্থ দিয়ে করার আবেদন করেছিলাম। অনেক টাকা উঠেছে। সবটাই কেরলের দুর্গতদের জন্য পাঠানো হবে।"

মুসলিম সত্যসাধক মণ্ডলের সদস্য পয়গম্বর সেখ নিজে তিন হাজার টাকা দিয়েছেন। একই সঙ্গে কেরলের দুর্গতদের জন্য অনেকের থেকে টাকা তুলেছেন। তাঁর কথায়, "এই বছরে কোরবানির জন্য আমি কোনও ছাগল বা পশুকে কোরবানি করিনি। কোরবানি করেছি আমার অর্থকে।" নিজের আর্থিক ত্যাগের কথা নিজের পরিচিত মহলে তুলে ধরে কেরলবাসীর জন্য সাহায্যের আবেদন করেছিলেন পয়গম্বর। সেই উপায়ে প্রায় এক লক্ষ টাকা তুলেছেন তিনি।