কীভাবে স্বামীর মৃত্যুর তিন বছর পর স্ত্রীর গর্ভে জন্মাল সন্তান?


মুম্বই: তিন বছর আগে মৃত্যু হয়েছে স্বামীর। ঠিক তিন বছর পরে স্বামীর মৃত্যু বার্ষিকীর দিনেই স্ত্রী প্রসব করলেন তাঁদের সন্তান। সৌজন্যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আইভিএফ।

উল্লিখিত দম্পতি হলেন সুপ্রিয়া জৈন এবং গৌরব এস। ২০১০ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। তখন দু'জনেই ২৫-র কোঠায়। পেশা নিয়ে দু'জনেই বেশ সচেতন ছিলেন। হয়তো একটু বেশিই গুরুত্ব দিয়েছিলেন নিজেদের পেশাকে।

বিয়ের পাঁচ বছর পরে যখন তাঁরা সন্তান নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করলেন তখন দেখা গেল অন্য বিপত্তি। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিলেন যে স্বাভাবিক উপায়ে গর্ভধারণ সম্ভব নয় সুপ্রিয়ার। অগত্যা ভরসা প্রযুক্তির সাহায্য। সেই পথেই এগোচ্ছিল সুপ্রিয়া-গৌরব। একই সঙ্গে চলছিল তাঁদের নতুন প্রোজেক্টের লোগো তৈরির কাজ। ঠিক তখনই ঘটল বড় অঘটন। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন গৌরব। একটি লরি ধাক্কা মারে গৌরবের গাড়িতে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

এর পর থেকেই সম্পূর্ণ বদলে যায় সুপ্রিয়ার জীবন। সন্তান নেওয়ার বিষয়টি কিন্তু মাথায় ছিল তাঁর। গৌরবের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পরেই যোগাযোগ করেন চিকিৎসকের সঙ্গে। এর জন্য নিজের বাপের বাড়ি বা শ্বশুরবাড়ির কাউকে কিছুই জানাননি সুপ্রিয়া জৈন। মনের জোর আর চিকিৎসকের আশ্বাসের উপরে ভরসা করেই নিয়েছিলেন ঝুঁকি।

সেই ঝুঁকিতেই এসেছে সাফল্য। তবে যাত্রাপথ খুব একটা মসৃণ হয়নি। একাধিকবার ব্যর্থ হয়েছিল প্রযুক্তির সাহায্যে সুপ্রিয়ার গর্ভধারণ প্রক্রিয়া। একটা সময় সারোগেসির পথে হাঁটার কথা ভাবতে শুরু করেছিলেন সুপ্রিয়া জৈন। কিন্তু সেই পথে যেতে হয়নি তাঁকে। আইভিএফ প্রক্রিয়াতেই এসেছে সাফল্য। তাঁর গর্ভেই জন্ম নিয়েছে স্বামী গৌরবের সন্তান। তাও আবার গৌরবের মৃত্যুদিনেই।

গত দুই বছরে অর্থাৎ ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে গৌরবের মৃত্যু দিনে বেঙ্গালুরুতে যেতেন সুপ্রিয়া। কিন্তু এই বছরে তা আর সম্ভব হয়নি। কারণ সেদিনই যে তাঁর কোল আলো করে এসেছে গৌরবের সন্তান। ছেলেকে কোলে নিয়ে সুপ্রিয়া বলেছেন, "ওই দিনটা আমার কাছে এখন থেকে আরও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।" একই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, "আমি নিজের না, গৌরবের সন্তান চাই। একটা সময় আমরা ঠিক করেছিলাম যে আমাদের একটা সন্তান হবে আর একটা আমরা দত্তক নেব। আমি চাই আমার ছেলে যেন গৌরবের মতো দেখতে হয়।"