হোয়াটস অ্যাপে আসা সারপ্রাইজ মেসেজের লিঙ্কে বিপদ


 আসানসোল: হোয়াটস অ্যাপে আসা সারপ্রাইজ মেসেজের লিঙ্ক থেকে ফাঁস হয়ে যেতে পারে গোপন তথ্য। গণেশ পুজো কিংবা বিজয়া দশমীর মতো দিনগুলিতে চমক দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে প্রিয়জনরা বিভিন্ন ধরনের লিঙ্ক হোয়াটস অ্যাপে পাঠান। তাতে কখনও লেখা থাকে লাল চিহ্নের মাঝে আঙুল দিয়ে চাপ দিলেই গণেশের আশীর্বাদ এবং লাড্ডু পাবেন। আবার কখনও বলা হয়, গোল চিহ্নে টাচ করলেই ভালো কিছু পাবেন। লিঙ্কে টাচ করলেই কখনও ভেসে ওঠে ১৫ আগস্টের আগাম শুভেচ্ছা বার্তা, আবার কখনও ভেসে ওঠে লাড্ডু সহ গণেশের ছবি। আধিকারিকরা বলছেন, প্রিয়জনদের পাঠানো লিঙ্ক সবসময় আপনার কাছে শুভেচ্ছাবার্তা হয়ে আসবে এমনটা নয়, অনেক সময় আপনার কাছে তা বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে। বুড়ো আঙুল দিয়ে লিঙ্কে টাচ করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার গোপন তথ্য সাইবার অপরাধীদের হাতে চলে যেতে পারে।
স্টেট ব্যাঙ্কের পুরুলিয়া, দুর্গাপুর এলাকার রিজিওনাল ম্যানেজার অজয় কুমার সিনহা বলেন, লিঙ্কে বুড়ো আঙুল দিয়ে টাচ করলে আধারের তথ্য হ্যাকারদের কাছে চলে যেতে পারে। তাই এই সব লিঙ্ক এড়িয়ে যাওয়া ভালো। পাশাপাশি ফোনে কাউকেই ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া উচিত নয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা প্রতারণার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন আধিকারিকরা। একসময় প্রতারকরা ব্যাঙ্ক আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে ফোন করে আমজনতার কাছে থেকে এটিএমের গোপন তথ্য হাতিয়ে নিত। কিন্তু, প্রশাসনের লাগাতার প্রচারে সচেতনতা অনেকটাই বেড়েছে। সেকারণে সাইবার অপরাধীরা তাদের কাজের ধরন বদলেছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে আসানসোলে কেন্দ্রীয় সরকারের এক আধিকারিকের মেয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে সাত হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়। এমটেক পাশ করা ওই যুবতী দাবি করেন, তিনি কাউকেই এটিএম কার্ডের গোপন তথ্য দেননি। এমনকী, যেসময় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়, সেইসময় তিনি পরীক্ষার হলে ছিলেন। দু'দিন আগে একই দাবি করেন আসানসোলের কল্যাণপুর হাউসিংয়ের এক মহিলা। তিনি বলেন, হঠাৎ করেই পাশবই আপডেট করতে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। তিনিও কাউকে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কোনও তথ্য দেননি বলে দাবি করেন। কখন টাকা তোলা হয়েছে সেটাও তিনি জানতে পারেননি। এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনার পর থেকে তদন্তকারীরা জানতে পারেন অপরাধীরা তাদের অপরাধের ধরন বদলেছে।

এক পুলিস আধিকারিক বলেন, হোয়াটস অ্যাপে আসা লিঙ্ক থেকে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। নির্দেশমতো লিঙ্কে বুড়ো আঙুল দিয়ে টাচ করলে গোপন তথ্য ফাঁস হতেই পারে। তাই বুড়ো আঙুলের চাপ দিয়ে কোনও লিঙ্ক খোলা উচিত নয়। প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ জমা পড়ছে। সন্দেহজনক ই-মেল বা হোয়াটস অ্যাপ মেসেজ এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।