২ মাস বন্ধ থাকবে খিদিরপুর ডক, যানজটের আশঙ্কা


রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দু'মাসের জন্য বন্ধ থাকবে খিদিরপুর ডক। মঙ্গলবার থেকে ৬০ দিন খিদিরপুর ডকের বদলে সেখানকার পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী জাহাজ ও বার্জ যাতায়াত করবে নেতাজি সুভাষ ডক দিয়ে। বিকল্প হিসাবে কাজে লাগানো হবে নেতাজি সুভাষ ডকের তিনটি বার্থ। কিন্তু দু'টি ডকের কাজের চাপ একটি ডকে পড়লে এনএস ডকের গেটগুলিতে পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা লাইন পড়তে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। যার জেরে বন্দরের বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের তরফে বেশ বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে। 
কলকাতার দু'টির ডকের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই খিদিরপুর ডকে ১৮টি বার্থ ও তিনটি ড্রাইডক রয়েছে। মূলত ডাল, কয়লা, বর্মা কাঠের মতো পণ্য পরিবহন হয় এই ডক দিয়ে। এই ডকের ১৩টি গেট দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি যাতায়াত করে। তা ছাড়া, আন্দামানের যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল করে খিদিরপুর ডক দিয়ে। আবার এনএস ডক দিয়ে যাবতীয় কন্টেনার পরিবহণের কাজ হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, খিদিরপুর ডকে ঢোকার ১০ মিটার গভীর ও ৩০ ফুট চওড়া লকগেটটি সংস্কারের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কারণ, নদীর নাব্যতা ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ এই লকগেট। যাতে নদীতে জোয়ার-ভাটার সময়ে জাহাজ ও বার্জ পরিবহণে কোনও সমস্যা না হয়, তাই খিদিরপুর ডক বন্ধ রেখে ওই দু'মাস বন্ধ রেখে লকগেট সংস্কারের কাজ চলবে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অন্তত ছ'মাসে আগেই বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি সূত্রের দাবি।

কলকাতা পুলিশের আশঙ্কা, লকগেটের এই সংস্কারের সময়ে খিদিরপুর ডক বন্ধ থাকলে খিদিরপুর ও গার্ডেনরিচ রোড, সিজিআর রোড ও লাগোয়া কয়েকটি রাস্তায় যানবাহন চলাচলে প্রভাব পড়তে পারে। পুলিশ সূত্রের দাবি, এমনিতেই ডকে প্রবেশ করার আগে পণ্যবাহী গাড়িগুলির নথি যাচাই করা হয় বলে গেটগুলিতে লম্বা লাইন পড়ে। এনএস ডকের ন'টি গেট দিয়ে এতদিন সেখানকার কন্টেনার বোঝাই গাড়ি যাতায়াত করত। তার সঙ্গে লকগেট সংস্কারের সময়ে এ বার খিদিরপুর ডকের পণ্যবাহী গাড়িগুলিরও ভিড় হবে। 

যানজটের সমস্যা যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সেই জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, এনএস ডকের ৯ নম্বর গেটে তুলনামূলক ভাবে যানবাহনের চাপ কম থাকে। ওই জায়গা দিয়ে ডালের গাড়িগুলি চলাচলের কথা বলা হয়েছে। তা ছাড়া, দিনে ভিড় কমাতে পণ্যবাহী গাড়িগুলির একাংশকে শুধু রাতে চালানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দিনে যেমন এনএসডকের নিজস্ব কাজ চলে, তেমন চলবে। ফলে, গাড়ির সংখ্যা এই ভাবে ভাগ হয়ে যাওয়ায় যানজটের সমস্যা কিছুটা কম হতে পারে বলে পুলিশ মনে করছে। 

তা ছাড়া, খিদিরপুর ডক দিয়ে মাসে দু'তিন বার যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল করে। এই দু'মাস যাত্রীবাহী জাহাজ এনএস ডক দিয়ে যাতায়াত করবে। তাই, খিদিরপুর ট্রাম ডিপো থেকে এনএস ডকের গেট পর্যন্ত যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া-নিয়ে আসার জন্য বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, এমনিতেই যেখানে যানজটের আশঙ্কা, সেই সময়ে যাত্রীরা ট্যাক্সি বা গাড়ি নিয়ে এনএস ডকের গেট পর্যন্ত গেলে পরিস্থিতি আরও জট পাকিয়ে যেতে পারে। তাই, খিদিরপুর ট্রাম ডিপো পর্যন্ত এসে বন্দর কর্তৃপক্ষের বন্দোবস্ত করে দেওয়া বাসে যাতায়াত করলে সমস্যা কমতে পারে।