ফের কানে মোবাইল, খড়দহে ট্রেনে কাটা পড়লেন ছাত্র

দুর্ঘটনায় মৃত সোহম মৈত্র।

ফের কানে হেড ফোন লাগিয়ে রেল লাইন পার। এবং ফের মৃত্যু। এ বার বলি বছর বাইশের ছাত্র সোহম মৈত্র। ঘটনাস্থল শিয়ালদহ মেন লাইনের খড়দহ স্টেশন।

পকেটে মোবাইল, কানে হেডফোন। খড়দহ স্টেশনের এক নম্বর থেকে চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাচ্ছিলেন সোহম। এক সঙ্গে আরও অনেকেই পার হচ্ছিলেন। এর মধ্যেই ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস চলে আসে। বুঝতেই পারেননি ওই যুবক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, চার নম্বর লাইনে ডাউন ট্রেন যখন ওই যুবকের প্রায় ঘাড়ের কাছে চলে এসেছে, তখন তাঁরা বুঝতে পারেন, ট্রেনের শব্দ কানেই যায়নি তাঁর। কিন্তু কিছু করার আর সুযোগ মেলেনি তখন। হইহই করে উঠতে না উঠতেই মুহূর্তের মধ্যে সেই ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় সোহমের দেহ। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই কলেজ পড়ুয়া।

এখানেই শেষ নয়। মঙ্গলবার বেলা ১১ নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। রেল লাইনের উপর তার পর প্রায় দু'ঘণ্টা পড়েছিল দেহ। কেন না ডোম আসেনি। ফলে সোহমের শরীরের উপর দিয়েই চলে গিয়েছে একের পর এক ট্রেন। ডোম যখন এলেন, তখন চেহারা চেনাই দায়!

মঙ্গলবার খড়দহ স্টেশনে মর্মান্তিক এই ছবি দেখে শিউরে উঠেছিলেন যাত্রী, হকার, দোকানি বা স্থানীয় মানুষজন। অভিযোগ, রেলের তরফে কেউ তৎপরতা দেখাননি। দেখালে এত দেরিতে ডোম আসতেন না। রেল সূত্র খবর, শিয়ালদহ থেকে ডোম গিয়ে রেল লাইন থেকে দেহ সরান। দেরি করে ডোম আসার বিষয়টি স্বীকারও করে নিয়েছেন এসআরপি (শিয়ালদহ) অশেষ বিশ্বাস। তিনি বলেন, "হ্যাঁ, ডোম একটু দেরি করেই গিয়েছেন।"

রামকৃষ্ণ মিশন ভিসি কলেজ (রহড়া)-এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সোহম। বাড়ি সোদপুরে। কলেজে যাওয়ার পথেই এই দুর্ঘটনা ঘটল। তাড়াহুড়ো করে রেল লাইনের উপর দিয়েই পার হচ্ছিল সোহম। সতর্ক হয়ে চোখ-কানও খোলা রাখেননি। যার পরিণাম, অকালেই চলে গেল প্রাণ।

বিজ্ঞাপন দিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে, রেল লাইনে ওপর না গিয়ে ওভারব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করুন। বলা হচ্ছে, মোবাইলে কথা বলতে বলতে বা কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে রাস্তা বা লাইন পার হবেন না। তার পরেও, প্রতি দিনই বহু মানুষ এসব মনেও রাখছেন না। ফলে দুর্ঘটনাও ঘটে চলেছে। কিন্তু তার পরেও হুঁশ ফিরছে না অনেকেরই।