শিক্ষকের পিএফের টাকা আটকে রাখায় সাসপেন্ড রাইপুরের স্কুলের হেডমাস্টার


কলকাতা: শিক্ষকের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আটকে রাখার অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সাসপেন্ড হলেন বাঁকুড়া জেলার রাইপুর থানা এলাকার লাউপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। বিচারপতি দেবাংশু বসাক জেলা স্কুল পরিদর্শককে নির্দেশ দেন, অন্য কোনও স্কুলশিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে মামলকারীর প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সমীরকুমার সিংহ মহাপাত্র প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা না পেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। রাজ্য সরকারের তরফে আদালতকে জানানো হয়, ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লিখিতভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, মামলাকারীর ওই অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য নথিপত্র যেন অবিলম্বে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়। কিন্তু, ওই জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল ইন্সপেক্টর জানিয়েছেন, প্রাক্তন ওই স্কুলশিক্ষক সম্পর্কিত কোনও ফাইল প্রধান শিক্ষক পাঠাননি।

এই অবস্থায় মামলাকারীর আইনজীবী মহাদেব খাঁ ২০১৮ সালের ১০ জুলাই অন্য একটি মামলা সূত্রে ওই প্রধান শিক্ষক সম্পর্কিত হাইকোর্টেরই রায় আদালতে পেশ করেন। তাতে দেখা যায়, ওই প্রধান শিক্ষক নিজের অহং বজায় রাখতে আদালতকেও তোয়াক্কা করেন না। সেই সূত্রে সেই রায়ে বলা হয়, জেলা স্কুল পরিদর্শক যেন ওই প্রধান শিক্ষকের বেতন ও অন্যান্য ভাতা বন্ধ রাখেন। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশও জারি হয়।

আদালত তাঁর ৩১ জুলাউয়ের নির্দেশে বলেছে, জেলা স্কুল পরিদর্শক ২৫ জুলাই মামলাকারীর প্রভিডেন্ট ফান্ড সম্পর্কিত নথি পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু, ২৭ জুলাই পর্যন্ত তা পাঠানো হয়নি। এমনকী ২২ মার্চ ওই প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছিল, মামলাকারী যাতে তাঁর প্রাপ্য পেতে পারেন, তার জন্য যেন দ্রুত তিনি পদক্ষেপ করেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম শুনানির দিন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের আইনজীবী উপযুক্ত উত্তর দেওয়ার জন্য সময় চান। কিন্তু, পরের দিন ওই আইনজীবী মক্কেলের সহযোগিতা পাচ্ছেন না জানিয়ে মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে।
এই অবস্থায় বিচারপতি বসাক তাঁর রায়ে বলেছেন, অন্য মামলায় শাস্তির নির্দেশ জারি হয়েও ফল হয়নি। তাই অবিলম্বে ওই প্রধান শিক্ষককে চাকরি থেকে সাসপেন্ড করতে হবে। তাঁর জায়গায় অন্য শিক্ষক সাময়িকভাবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহণ করে মামলাকারীর প্রভিডেন্ট ফান্ড সম্পর্কিত নথি তৈরি করবেন যত দ্রুত সম্ভব। ৭ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন জেলা স্কুল পরিদর্শককে পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে আদলতকে ওয়াকিবহাল করতে হবে।