পুকুরে স্কুলগাড়ি, রক্ষা পেল ১৩ পড়ুয়া

পুকুরে পড়ে রয়েছে স্কুলগাড়ি। মঙ্গলবার, দক্ষিণ বাকসাড়ায়।

পুকুরের মধ্যে অর্ধেক উল্টে রয়েছে একটি স্কুলগাড়ি। জানলা-দরজা দিয়ে হাত-মুখ বার করে আর্তনাদ করছে একদল পড়ুয়া। মঙ্গলবার বিকেলে এমন ঘটনা দেখে চমকে উঠেছিলেন দক্ষিণ বাকসাড়া শিবতলার বাসিন্দারা। তাঁরাই তড়িঘড়ি পুকুরে নেমে পড়ুয়াদের উদ্ধার করতে শুরু করেন। খবর পেয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যে পৌঁছয় পুলিশ ও দমকলের একটি ইঞ্জিন। অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় গাড়িতে থাকা ১৩ জন পড়ুয়াকে।

স্থানীয়েরা জানান, ধূলাগড়ের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ছুটির পরে পড়ুয়াদের বাড়িতে নামানোর জন্য রওনা দিয়েছিল গাড়িটি। দক্ষিণ বাকসাড়ায় কয়েক জনকে নামিয়ে সেটি যখন এলাকার একটি সরু রাস্তা ধরে আন্দুল রোডের দিকে যাচ্ছিল, তখন উল্টো দিকে থেকে আসা একটি গাড়িকে জায়গা দিতে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা। পুকুরপাড়ের রাস্তা ধসে পুকুরে ঢুকে যায় গাড়িটি। তাতে তখন ছিল চতুর্থ থেকে সপ্তম শ্রেণির ১৩ জন পড়ুয়া। গাড়িটি কাত হয়ে জলে ডুবতে থাকার সময়েই চিৎকার শুরু করে তারা। একে অন্যের ঘাড়ের উপরে গিয়ে পড়ে। হাতে চোট লাগে এক পড়ুয়ার। ঘটনাটি দেখে ছুটে আসেন পাড়ার কয়েক জন যুবক। তাঁরাই উদ্ধারকাজ শুরু করেন।

ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায়, পুকুরপাড়ে ভিড় করে আছেন এলাকাবাসী। গাড়িটিকে ক্রেন দিয়ে টেনে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। অধিকাংশ পড়ুয়াকে অভিভাবকেরা এসে বাড়ি নিয়ে গেলেও কয়েক জন পড়ুয়ার তখনও আতঙ্ক কাটেনি। তারা অভিভাবকের সঙ্গে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিতে থাকা চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া শিবাঙ্গী আইচ বলে, ''গাড়িটা যে দিকে কাত হয়ে গিয়েছিল, সে দিকেই বসেছিলাম। সবাই আমার ঘাড়ে এসে পড়েছিল। দম বন্ধ হয়ে আসছিল। তখনই এক জন দরজা খুলে আমার হাত ধরে টেনে তুলল।'' শিবাঙ্গীর মা সঞ্চিতা বলেন, ''চালকের ফোন পেয়ে পাগলের মতো ছুটে আসি। হাত-পা কাঁপছিল। জীবনে এত ভয় পাইনি। মেয়েটাও ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিল।''

স্থানীয় বাসিন্দা কল্যাণ বসাক বলেন, ''চোখের সামনে গাড়িটাকে পুকুরে পড়তে দেখে ছুটে আসি। আমরাই বাচ্চাদের উদ্ধার করতে শুরু করি। পরে দমকল ও পুলিশ আসে।'' বাসিন্দারা জানান, উল্টো দিক থেকে আসা গাড়িকে জায়গা দিতে গিয়ে পুকুরের পাড় ঘেঁষে যাওয়ার সময়ে তা ধসে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ব্যাপারে চালকের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। স্কুলগাড়ির চালককে আটক করেছে পুলিশ।