তুলে নিয়ে গিয়ে মদ খাইয়ে গণধর্ষণ টাকিতে, ধৃত এক


স্কুলে যাতায়াতের পথে কটূক্তি চলছিল। তা নিয়ে প্রতিবাদ করলে উল্টে হুমকি দিত ছেলেটি।

ফন্দি এঁটে সে-ই বছর চোদ্দোর মেয়েটিকে মোটর বাইকে তুলে নিয়ে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে যায়। সেখানে ততক্ষণে ছেলেটির তিন সঙ্গী বসে মদ্যপান করছে। মেয়েটিকে সেখানে জোর করে মদ খাইয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। একজনকে ধরে ফেলে মারধর করে জনতা। কিন্তু সুযোগ বুঝে সকলে পিঠটান দেয়। পরে মূল অভিযুক্ত সবুজ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়েটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। ধৃতের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাসনবাদের টাকিতে, ইছামতীর ধারে শ্মশানঘাটে। টাকি এমনিতে রাজ্যের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। সারা বছর মানুষ ঘুরতে আসেন এখানে। শহরের কাছেই গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এলাকায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর দাবিও উঠছে। টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ''রাজবাড়ি ঘাটের কাছে কয়েকটি ছেলে একটি মেয়ের হাত ধরে টানাটানি করার সময়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখনই ঘটনাটি জানাজানি হয়। মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। এমন ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়।'' গেস্ট হাউসে উঠতে গেলে যাতে পরিচয়পত্র-সহ নথিপত্র দেখা হয়, সে জন্য গেস্ট হাউসের মালিকদের বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। অন্যথায় লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি। পুলিশি তৎপরতা বাড়ানোর জন্যও থানাকে বলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পুরপ্রধান।

কিন্তু বৃহস্পতিবারের ঘটনা ঘটল কী ভাবে? মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছে, সে বাড়ির সামনে খেলছিল। সে সময়ে সবুজ হাজির হয় সেখানে। মেয়েটির এক আত্মীয় মারা গিয়েছে বলে খবর দেয়। সেখানে নিয়ে যাবে বলে। মেয়েটির দাবি, সে প্রথমে রাজি হয়নি। কিন্তু সবুজ জোর করতে থাকায় এক সময়ে বাইকে উঠে বসে।

বেলা তখন প্রায় আড়াইটে। মেয়েটিকে বাইকে বসিয়ে আত্মীয়ের বাড়ির রাস্তা না ধরে সবুজ টাকি শ্মশানঘাটের দিকে যায়। মেয়েটি বাধা দিলেও সে শোনেনি বলে অভিযোগ।

মেয়েটিকে জোর করে মদ খাওয়ানো হয় বলে অভিযোগ। বেহুঁশ হয়ে পড়লে তার উপরে অত্যাচার চলে। বেলা সাড়ে ৫ টা নাগাদ মেয়েটিকে নিয়েই সবুজ ও তার তিন বন্ধু টাকি রাজবাড়ি ঘাটের কাছে আসে। তখনও সকলের পা টলছে। মেয়েটির হাত ধরে টানাটানি করছিল সবুজরা। এক সময়ে রাস্তায় পড়ে জ্ঞান হারায় মেয়েটি। স্থানীয় কয়েকজনের চোখে পড়ে। তারা ওই যুবকদের মারধর করে। মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সুযোগ বুঝে ছেলেরা পালায়।

মেয়েটি বলে, ''সবুজের জন্য এক সময়ে স্কুল ছাড়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। মৃত আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাবে বলায় রাজি হয়েছিলাম। সেই সুযোগে আমাকে বেহুঁশ করে অত্যাচার চালাল।''