এ যেন সিনেমার গল্প! আটমাস পর বাড়ি ফিরলেন ফুলবাই


বারাকপুর: এ যেন একেবারে সিনেমার গল্প৷ বেশ কয়েকমাস আগে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত এক মহিলাকে উদ্ধার করে টিটাগড় থানার পুলিশ৷ ভর্তি করে দিয়ে যান বিএন বসু হাসপাতালে৷ গত ডিসেম্বর মাস থেকে এখানেই ছিলেন৷ ধীরে ধীরে জানা যায় তাঁর পরিচয়৷ পুলিশই যোগাযোগ করে৷ আটমাস পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বৃহস্পতিবারই বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন ফুলবাই৷ চোখের জলে ফুলবাই নামে মধ্যপ্রদেশের ওই মহিলাকে বিদায় জানালেন বারাকপুরের এই মহকুমা হাসপাতালের নার্স, আয়ারা৷

২০১৭ সালের ৯ই ডিসেম্বর রাস্তা থেকে তুলে এনে টিটাগড় থানার পুলিশ ব্যারাকপুর বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে নাম পরিচয়হীন এক মহিলাকে৷ সেই সময় তাঁর পায়ে গভীর একটা ক্ষত ছিল৷ এবং সম্পূর্ণ মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন তিনি৷ চিকিৎসকদের মতে, ওই মহিলার পায়ে সেলুলাইটিস ইনফেকশন হয়ে গিয়েছিল৷

এরপর হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, আয়া, এবং ড্রেসিং ষ্টাফরা সকলে মিলে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলে তাঁকে৷ বেশ খানিকটা সুস্থ যখন নিজের নাম বলেন ওই মহিলা ফুলবাই৷ ঠিকানা এবং স্বামীর নাম বলতে পারলেও তাঁকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরানো সম্ভব হচ্ছিল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষে৷

এরপর টিটাগড় থানার পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয় এবং বিষয়টি জানানো হয় মহকুমাশাসক পীযূষকান্তি গোস্বামীকে৷ তিনিই উদ্যোগ নিয়ে ওয়েস্টবেঙ্গল অ্যামেচার রেডিও ক্লাবকে বিষয়টি জানান৷ তারাই অনেক খোঁজ করে প্রায় আটমাস পর ফুলবাইয়ের বাড়ির খোঁজ দেয়৷

বৃহস্পতিবার হাসপাতালে তাঁর শেষ দিন ছিল৷ ফুলবাই মধ্যপ্রদেশে বাড়িতে রওনা দেওয়ার আগে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন হাসপাতালের সকলে৷ হাসপাতালের মহিলা বিভাগের নার্স,আয়ারা দিনরাত এক করে ভিনরাজ্যের এই মহিলাকে সুস্থ করে তুলেছিলেন৷ এতদিন ফুলবাইয়ের সঙ্গে ছিলেন তাঁরা৷

বাড়ি ফিরে হাসপাতালের দিদিদের সকলকে মনে পরবে বলে জানালেন ফুলবাই৷ বৃহস্পতিবার ফুলবাইকে নিয়ে মধ্যপ্রদেশের পথে রওনা দেয় টিটাগড় থানার পুলিশ ও অ্যামেচার রেডিওর সদস্যরা৷ কলকাতা রেল স্টেশন থেকে ট্রেন ধরার কথা তাঁদের। মহকুমা হাসপাতালের মহিলা বিভাগে ফুলবাইয়ের বেডটি বৃহস্পতিবার থেকে ফাঁকা৷ এতগুলো দিন এখানে থেকে সকলের মনই জিতে নেয় সে৷ তবে এখন ফুলবাই সম্পূর্ণ সুস্থ৷ এটাই খুশির খবর৷ আর সবথেকে বড় প্রাপ্তি৷