এরপর গোয়া! এই বিজ্ঞানী কেরলের বিপর্যয়ের সতর্কতা দিয়েছিলেন ২০১১-তেই


কেরলের পর গোয়া। একই রকম ভয়াবহ বন্য়া পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে আরব সাগরের তীরের ছোট্ট রাজ্যটিও। সতর্ক করলেন প্রখ্য়াত পরিবেশ বিজ্ঞানী মাধব গ্য়াডগিল। ২০১১ সালেই তাঁর নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি পশ্চিমঘাট পর্বত এলাকার পরিবেশ নিয়ে একটি রিপোর্টে কেরালায় এরকম ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন।

তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য কয়েকটি রাজ্যের মতোই গোয়াতেও মুনাফার লোভে পরিবেশগত সতর্কতা না মেনেই চলছে পরিবেশ ধ্বংস, চলছে একের পর এক নির্মাণ। তিনি বলেন, 'নিঃসন্দেহে পশ্চিমঘাটে পরিবেশগত ক্ষেত্রের যাবতীয় সমস্যা ফুটে উঠছে। অবশ্যই গোয়াতে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা নেই, তবে আমি নিষঅটিত কেরালার মতো এত বড় বিপর্যয় না হলেও গোয়াতেও এরকম সমস্যা তৈরি হবে।'

তিনি জানান, বিচারপতি এমবি শাহ-এর কমিশন জানিয়েছিল বেআইনি খননকার্যে গোয়াতে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার বেআইনি মুনাফা আসে। তাঁর দাবি এই মুনাফার লোভেই সরকার পরিবেশগত সতর্কতা নেয় না। তিনি জানান, পাথর কাটার ব্যবসাও চলে এই অঞ্চলে, যে ব্।বসায় অতি কম বিনিয়োগে প্রচুর লাভ করা যায়। এতে করে এই অঞ্চলে আর্থিক বৈষম্যও বেড়েছে বলে দাবি করেছেন এই পরিবেশ বিজ্ঞানী।

ইদানিংকালে এই সব বাইনি ব্যবসাদারদের মুনাফার কারণেই সরকার থেকে বৈধতা দেওয়াও শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্যাডগিল। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার তো পিছনের দিক হাঁটছে, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল যাতে ঠিকভাবে কাজ না করতে পারে, তারা তা নিশ্টিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে।'

তিনি জানান, মাইনিং সংস্থাগুলি এনভায়ার্নমেন্ট অ্য়াসেসমেন্ট রিপোর্টে মিথ্যা তথ্য দেয়। গোয়ায় খননকার্যের পরিবেশগত প্রভাব পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সেসময়ই এই মিথ্যা তাঁর কাছে ধরা পড়েছিল। তিনি বলেন, খননের হাইড্রোলজিকাল ইমপ্যাক্ট নিয়ে যতরকম মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া যায় সবই থাকে তাদের রিপোর্টে।
কেন্দ্রীয় সরকার ২০১১ সালে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পরিবেশ নিয়ে গবেষণার জন্য গ্যাডগিলের নেতৃত্বে ওয়েস্টার্ন ঘাট ইকোলজি এক্সপার্ট প্যানেল বা ডব্লুজিইইপি গঠন করেছিল। সেই প্যানেল পশ্চিমঘাটের বেশ কিছু এলাকা পরিবেশগতভাবে স্পর্শকাতর বলে জানিয়েছিল। খননকার্য ও পাথর কাটা অনেকটাই বন্ধ করে দিতে হবে, জঙ্গল কেটে বা জলাশয় বুজিয়ে নির্মাণ খরা বন্ধ করতে হবে - এরকম বেশ কিছু সুপারিশ করেছিল তারা। নাহলে কেরালার বন্যার মতো ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে বলে সতর্কও করেছিল সেই প্যানেল। কিন্তু তার কোনওটিই মানেনি সরকার।