রূপশ্রীর টাকা ফেরাল ছাত্রী


পাকা দেখা সারতে গিয়ে পাত্রের কাণ্ড-কারখানা শুনে থ মেয়ের বাবা। পাড়া-পড়শির কাছে জানতে পারেন, ছেলেটি নাকি প্রায়ই মদ্যপ অবস্থায় রাস্তাঘাটে পড়ে থাকে। ফিরে এসে মেয়েকে সে কথা জানান। বেঁকে বসে মেয়েও। জানিয়ে দেয়, ওই পাত্রের সঙ্গে কখনওই বিয়ে করবে না। আরও পড়াশোনা করবে।

এ দিকে, তত দিনে বিয়ের জন্য আবেদন করে রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা পেয়ে গিয়েছিল পরিবারটি। তাঁরা ফেরত দিয়েছেন সেই টাকা।

মেয়ের বাড়ি পাথরপ্রতিমার ব্রজবল্লভপুর গ্রামে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ব্রজবল্লভপুর স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে সন্ধ্যা মণ্ডল। বয়স আঠারো পেরিয়েছে। জুলাই মাসের ১০ তারিখ বিয়ের ঠিক হয়েছিল। তার আগেই রূপশ্রীর টাকা হাতে আসে। নিয়ম অনুযায়ী, ওই প্রকল্পে আবেদন করতে হলে বিয়ের কার্ড আবেদনপত্রের সঙ্গে দিতে হয়। কার্ড ছাপিয়ে তা দেওয়াও হয়েছিল।

পাত্রের ঠিকানা সাগরের সুমতিনগরের মন্দিরতলায়। বিয়ের কয়েক দিন আগে পাত্রীর পরিবারের লোকজন পাকা দেখা সারতে যান সেই বাড়িতে। সে সময়ে তাঁরা জানতে পারেন পাত্রের স্বভাবের কথা। মাথায় হাত পড়ে পাত্রীর পরিবারের।

মেয়েও যখন তা জানতে পেরে বিয়েতে বেঁকে বসে, তখন খুব একটা আপত্তি করেননি বাড়ির লোক। কিন্তু রূপশ্রীর টাকা যে নেওয়া হয়ে গিয়েছে। চিন্তায় পড়ে পরিবার। শেষমেশ তাঁরা ঠিক করেন, টাকা ফেরত দেবেন। সেই মতো সোমবার বিকেলে তাঁরা হাজির হন পাথরপ্রতিমা বিডিওর কাছে।

মেয়ের বাবা দিনমজুর পবন বলেন, ''পাত্রের সম্পর্কে জানতে পারলাম, মদ খেয়ে রাস্তাঘাটে পড়ে থাকে। সারা দিন মদ খায়। যা কানে এল, তাতে আমরা ভেঙে পড়ি। বাড়িতে জানাই। কেউই বিয়েতে সায় দেয়নি।'' সে কারণেই তাঁরা রূপশ্রীর টাকা ফেরালেন বলে জানিয়েছেন পবন।

ব্রজবল্লভপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মান্না বলেন, ''আমার স্কুলের ছাত্রী প্রকল্পের টাকা ফেরত দিয়ে খুবই প্রশংসনীয় কাজ করেছে।''

পাথরপ্রতিমার বিডিও সীতাংশু শীটও জানান, বিয়ে ভেঙে দিয়েছিল মেয়ের পরিবার। তাই তাঁরা টাকা ফেরত দিয়ে গিয়েছেন।