৯ ঘণ্টা সাফাইকর্ম শেষে দুটো রুটি, উত্তরপ্রদেশের হোমে নারকীয় ছবি!


বিহার হোম কাণ্ডের পর মুজাফ্ফরপুর হোম কাণ্ডে ক্রমাগত অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপি সরকারের। ইতিমধ্যেই সংসদে এনিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব এনেছে বিরোধীরা। যোগীর রাজ্যে হোম থেকে উদ্ধার মেয়েদের উপর কী নৃশংস অত্যাচার চলত তা প্রকাশ্যে আসতেই সরকারকে কাঠগড়ায় তুলছে বিরোধীরা। তড়িঘড়ি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এক বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুরের অভিযোগ, তিনি কংগ্রেসে যোগদান করতে চাইছিলেন বলেন তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে সরকার।

যে কাণ্ড নিয়ে লখনউ থেকে দিল্লির রাজনীতি তোলপাড় তার গভীরতাও কম নয়। হোম থেকে উদ্ধার মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে। জানা যাচ্ছে হোমে মেয়েদের উপর পাশবিক অত্যাচার চালাত ওয়ার্ডেন এবং তাঁর মেয়ে। শারীরিক নিগ্রহের পাশাপাশি, কায়িক পরিশ্রমেও বাধ্য করা হত কিশোরীদের। পরিবর্তে নিয়মিত খেতেও দেওয়া হত না।

দেওরিয়ার হোম থেকে উদ্ধার কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলেছেন উত্তরপ্রদেশ মহিলা সহায়তা কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবীরা। তাদের মেয়েরা জানিয়েছে, ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে তুলে দেওয়া হত তাদের। ঘুম থেকে উঠেই সঙ্গে সঙ্গে গোটা হোম চত্বর পরিষ্কার করতে হত তাদের। ঠিকমতো পরিষ্কার করতে না পারলে চলত মারধর। সকাল ৮টা পর্যন্ত চলত পরিষ্কার করার কাজ। ৮টার সময় কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম পেত মেয়েরা। স্নানের পর মিলত প্রাতঃরাশ। প্রাতঃরাশে থাকত মোটে দুটো রুটি, সঙ্গে খালি আচার। কোনও দিন কোনও দিন কপাল ভাল থাকলে দেওযা হত ট্যালট্যালে সবজি। খাওয়া শেষ হলে আবারও সাফাইয়ের কাজে লাগিয়ে দেওয়া হত মেয়েদের। সেও চলত ৩ ঘণ্টা। সন্ধ্যায় কোনও খাবারও জুটত না। রাতের খাবার খাওয়ার আগে আরও এক রাউন্ড সাফাই করতে হত মেয়েদের।

মহিলা কমিশনের যে কর্মীরা মেয়েদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তাঁরা বলছেন, মেয়েগুলি এখনও এই ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অনেকেই এখনও কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। সবাই স্বাভাবিক হলে আরও বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এর আগে একটি মেয়ে পালিয়ে গিয়ে স্থানীয় মহিলা থানায় পুরো ঘটনার বিবৃতি দিয়েছিল। মহিলা থানাটি হোমের খুব একটা দূরেও ছিল না।  কিন্তু তাতেও পুলিশ কেন কোনও পদক্ষেপ করেনি তাঁর উত্তর মিলছে না। অনেকেই এর পিছনে বড় রাজনৈতিক চক্রের যোগ দেখতে পাচ্ছেন।      

Highlights
ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে তুলে দেওয়া হত আবাসিকদের।
প্রাতঃরাশে থাকত মোটে দুটো রুটি, সঙ্গে খালি আচার।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।