রাতের শোয়ে আগুন প্রিয়া সিনেমা হলে


নাইট শো চলার সময়ে আচমকাই দর্শকেরা দেখলেন, ধোঁয়ায় ভরে যাচ্ছে প্রিয়া সিনেমা হল। আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে বাইরে আসতে থাকেন তাঁরা। বাইরের সিঁড়িও তখন ধোঁয়ায় ঢাকা। হলটির উপরের তলায় নিজেদের বাড়িতেই তখন আটকে পড়েছেন হল-মালিকের পরিবারের চার জন।

দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের পাশের সিনেমা হলটিতে রবিবার রাতের এই অগ্নিকাণ্ডে কারও তেমন ভাবে আহত হওয়ার খবর না-থাকলেও ভালই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হলটির। ধোঁয়ায় এক জন মধ্যবয়সি দর্শক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে নিকটবর্তী শিশুমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

দমকল সূত্রের খবর, এ দিন রাত ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ আগুন লাগে। সেই সময়ে সেখানে 'ফ্যানি খান' ছবির শো চলছিল। দমকল সূত্রের খবর, হল-এ অন্তত ৩০ জন দর্শক ছিলেন। দমকলের ৪টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। রাত ১১টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ এবং দমকল সূত্রের খবর, টিকিট কাউন্টার লাগোয়া একটি মোমোর দোকান থেকে আগুন লেগেছে বলে অনুমান।

হলের উপরের অংশেই সপরিবার থাকেন হল-মালিক অরিজিৎ দত্ত। পুলিশ সূত্রের খবর, সেই সময়ে তাঁরা খেতে বসেছিলেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছাদে চলে যান অরিজিৎবাবু। সেখান থেকেই তাঁদের উদ্ধার করেন দমকলকর্মীরা।

ঘটনার সময়ে সিনেমা হলের ভিতরেই ছিলেন প্রতীক বসু নামে এক যুবক। তিনি বলছেন, ''আচমকাই গন্ধ পেয়ে বেরিয়ে আসি। বাইরে এসে দেখি, আগুন লেগেছে।'' চাঁদকুমার মণ্ডল নামে এক জন প্রজেক্টর অপারেটর বলছেন, ''আমি প্রজেক্টর রুম থেকে দেখলাম, গোটা হল ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে।'' সিনেমা হলের একতলাতে বেশ কয়েকটি দোকান এবং পাব রয়েছে। আগুন দেখে আতঙ্কিত হয়ে সেখান থেকেও লোকজন পালাতে শুরু করে দেন। হলের চারপাশের রাস্তা ঘিরে দেয় পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয় দোকান-পাব।

এ দিন রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়, পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার এবং পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। শোভনবাবু বলেন, ''কী ভাবে আগুন লেগেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।''

দেবাশিসবাবু বলেন, ''সিনেমা হলে পর্যাপ্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কি না, তা দমকল খতিয়ে দেখবে।'' ঘটনাস্থলে যান অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ দেব-ও।