চোপড়ায় গুলি করে কুপিয়ে খুন


পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন শুরু হওয়ার পরে শনিবার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে মোট ৭ জনের মৃত্যু হল রাজ্যে। তাঁদের চার জনই উত্তরবঙ্গের। শনিবার উত্তর দিনাজপুরের পণ্ডিতপোতায় মারা যান এক জন। সোমবার মালদহের গোপালপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আরও দু'জন। এ দিন উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া দাসপাড়ায় গুলি করে কুপিয়ে মারা হল মহম্মদ খইরুলকে (৩৫)। তৃণমূলের দাবি, পেশায় রাজমিস্ত্রি খইরুল তাঁদেরই সমর্থক। গুলি-বোমায় অনেকে জখমও হয়েছেন। এ দিনই ইটাহারে দলের জেলা সভাপতি অমল আচার্যের বাড়ি সহ নানা জায়গায় বোমা, গুলি, তির নিয়ে বিজেপি সমর্থকেরা আক্রমণ করেছে বলেও তৃণমূলের দাবি। বিজেপি অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ইটাহার ও চোপড়ায় পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই উত্তেজনা ছিল। দাসপাড়া পঞ্চায়েতে ২৩টি আসনের সব ক'টিই জিতেছে তৃণমূল। তবু উদ্বেগে ছিল প্রশাসন। এই এলাকার মাত্র দুই কিলোমিটারের মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্ত। বিহার সীমানা কুড়ি কিলোমিটার। ভোটের সময়েই এলাকাতে অনেক আগ্নেয়াস্ত্র ঢোকে বলে অভিযোগ। এ দিন গুলি লাগে তিন জনের গায়ে, বোমায় আহত আরও তিন জন এবং বল্লম ও দা-এর মতো ধারালো অস্ত্রে জখম হয়েছেন অন্তত ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে জুনাব আলির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর গলায় বল্লম বিঁধেছে।
তৃণমূলের দাবি, কংগ্রেস কর্মীরাই গন্ডগোল করেছেন। তাঁরাই পঞ্চায়েত ভবন থেকে সামান্য দূরে খাটোখোয়াগছে শোয়েব আখতার নামে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িও জ্বালিয়ে দেন বলে অভিযোগ। শোয়েবের বাড়িতে জড়ো হন তৃণমূল কর্মীরা। শোয়েব বলেন, ''আচমকা বোমা, গুলি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান কংগ্রেস ও সিপিএমের কর্মীরা।'' চোপড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অশোক রায়ের দাবি, ''এখানে তৃণমূল গণনাকেন্দ্রেই কাউকে যেতে দেয়নি। এ দিন বিনা কারণে হামলা করেছে।'' কিন্তু জেলায় আগ্নেয়াস্ত্রের এত দাপট কেন, তার জবাব পুলিশ দেয়নি। এসপি অনুপ জায়সবাল বলেন, ''পুলিশই গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।''

তবে এ দিন ইটাহারে অমলবাবু আক্রান্ত হওয়ায় তৃণমূলও অবাক। অমলবাবুর খাসতালুক ইটাহার পঞ্চায়েতে বিজেপি প্রধান পদ দখল করে, সিপিএম উপপ্রধানের। সেই খবর রটতেই জাতীয় সড়ক ও তার আশেপাশে নানা জায়গা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে। অমলবাবুর বাড়িতেও বোমা, ইট-তির ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। অমলবাবুর দাবি, ''বিজেপি খুন করার ষড়যন্ত্র করেছিল।'' তবে পুলিশে অভিযোগ হয়নি। বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ''হামলা হলে, তা জনরোষের বহিঃপ্রকাশ।''