২ খুদের মানবিকতা : পিগি ব্যাঙ্ক ভেঙে টাকা পাঠাল বন্যা ত্রাণ তহবিলে


কোচি : পরিস্থিতি উন্নতির কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি। ইতিমধ্যে বন্যা ও ধসে ৩৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ লোক ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। কেরালায় এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে একাধিক রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী বন্যা ত্রাণ তহবিলে সেই টাকা জমা পড়ছে। রাজ্যের এই কঠিন পরিস্থিতিতে এবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল দুই খুদে। নিজেদের সঞ্চয়ের পিগি ব্যাঙ্কের টাকা তারা দান করতে চলেছে ত্রাণ তহবিলে।


হারুন এবং দিয়া। কোচির বাসিন্দা। আব্বা-আম্মার নাম সিদ্দিকি মাল্লাসেরি ও ফতিমা সিদ্দিকি। একটি পড়ার টেবিল কেনার জন্য গত ২ বছর ধরে পিগি ব্যাঙ্কে টাকা জমাচ্ছিল হারুন ও দিয়া। কেরালায় ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতিতে আব্বা-আম্মাকে ত্রাণ তহবিলে পোশাক এবং অন্য সামগ্রী দান করতে দেখে। তা দেখে অনুপ্রাণিত দুই খুদে আম্মাকে জিজ্ঞাসা করে, তারাও যদি মুখ্যমন্ত্রী বিপর্যয় ত্রাণ তহবিলে "বেবি ব্যাঙ্কের" টাকা দান করে কেমন হয়। এত ছোটো দুই ছেলে-মেয়ের মুখে এই মানবিকতার কথা শুনে খুশিতে প্রাণ ভরে ওঠে আম্মার। নিজের ফেসবুক পোস্টে সগর্বে সেকথা জানিয়েছেন আম্মা ফতিমা বিবি।

টাকার পরিমাণ অবশ্য কম। ২২১০ টাকা। কিন্তু, এবয়সে তাদের মানবিকতা দেখে অভিভূত সকলেই। ফতিমা বিবির ফেসবুক পোস্টের পর হারুন ও দিয়ার উদ্যোগ সমাদৃত হয়েছে সর্বত্র। নিজের পোস্টে ফতিমা বলেছেন, "আমি জানি, পরিমাণটা বেশি নয়। কিন্তু, ওরা ওদের কাজ করেছে। আমরা ওই টাকা CMDRF-এ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" শুধু তাই নয়, আব্বা-আম্মাকে সেই টাকায় মুদির জিনিস কিনতেও বাধা দিয়েছে তারা। 

অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা দূরে সরিয়ে মানবিকতা দেখিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের এক সেলসম্যানও। বিষ্ণু কাচাওয়া নামে ওই সেলসম্যান কেরালার কান্নুর জেলায় বাড়ি বাড়ি ব্ল্যাঙ্কেট বিক্রি করেন। বহু কষ্টের উপার্জন। তা সত্ত্বেও নিজের সমস্যার কথা ভুলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনিও। বিক্রির জন্য রাখা ৫০টি ব্ল্যাঙ্কেট তিনি ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।