ভাইঝিকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা, কাকার তত্পরতায় পুলিশের জালে যুবক


শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে তখন প্রবল ভিড়। ফাঁক গলে হাত ধরে ছুটছে এক যুগল। পিছনে এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি। দৌ়ড়তে দৌড়তেই ছেলে-মেয়েটির দিকে আঙুল তুলে তিনি চেঁচাচ্ছেন, ''চোর চোর। চুরি করে পালাচ্ছে!''

চিৎকার কানে যেতেই স্টেশনে ঢোকার মুখে কয়েক জন ধরে ফেলেন যুগলকে। তত ক্ষণে ছেলেটির গালে থাপ্পড়ও কষিয়েছেন কেউ কেউ। এ বার মধ্যবয়সী বলেন, ''চোর নয়। এই ছেলেটা আমার ভাইঝিকে নিয়ে পালাচ্ছিল। দৌড়ে ধরতে পারছিলাম না। আপনারা যাতে ধরে দেন, তাই চোর চোর বলে চেঁচাচ্ছিলাম!'' বিরক্ত ভিড়টা ফাঁকা হয়ে যায় এর পরেই। বুধবারের ওই ঘটনায় যুগলকে আটক করে শিয়ালদহ জিআরপি। পরে এন্টালি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাদের।

জানা যায়, গত ২১ জুলাই থেকে এন্টালি থানার পুলিশ খুঁজছিল এই যুগলকে। ওই দিনই এক ১৫ বছরের কিশোরীর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন বাবা। অভিযোগ ছিল, রোহিত সাউ নামে এক যুবক তাঁর মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে পালিয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই যুবককে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। সেখানেই গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে কিশোরীর।

কিশোরী জানায়, কয়েক বছর ধরেই রোহিতের সঙ্গে পরিচয় তার। গত ২১ জুলাই সকালে তারা পালিয়ে বিহারে রোহিতদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠে। সেখানে বিয়েও করে। ইতিমধ্যে কাকার সঙ্গে যোগাযোগ করে কিশোরী। কাকা তাদের শহরে ফিরে আসতে বলেন। সেই সঙ্গে জানান, বাড়িতে তাদের বিয়ে মেনে নিয়েছে। ঠিক হয়, শিয়ালদহ স্টেশনের সামনে কাকার সঙ্গে দেখা করবে তারা। কিন্তু তার আগেই কিশোরীর সন্দেহ হওয়ায় দু'জনে ছুটতে শুরু করে। যদিও কাকার বুদ্ধির জোরে ধরাও পড়ে যায়। এ বার কী করবে সে? কিশোরী জানিয়েছে, রোহিতের সঙ্গেই সে থাকতে চায়। বিচারককেও তা জানিয়েছে কিশোরী।

যদিও কিশোরী মেয়ের এ ভাবে পালিয়ে যাওয়া কিছুতেই মানতে পারছেন না তার বাবা। তিনি বলেন, ''মানতে পারব না। ছেলেটা ভাল নয়। তা ছাড়া ও কিশোরী। আইনের পথেই লড়াই চালিয়ে যাব।''