শিক্ষিকার বাড়ি থেকে উদ্ধার যুবকের পচাগলা দেহ!


মেয়েকে নিয়ে থাকেন শিক্ষিকা। দু'জনের পক্ষে বাড়ি বেশ বড়সড়। তাই বাড়ির একতলার সামনের ফাঁকা ঘরটা ভাড়া দিয়েছিলেন শিক্ষিকা। বছর পঁত্রিশের এক যুবককে গত সাত মাস ধরে ভাড়া থাকতেন সেখানে। মা-মেয়ের সঙ্গে ভালোই সম্পর্ক ছিল তাঁর। কিন্তু ভাড়া ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হল সেই যুবকেরই পচা গলা দেহ। দেখেই মনে হচ্ছিল, মৃত্যু হয়েছে দিন চারেক আগে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, দিন চার-পাঁচেক আগে থেকেই বাড়িতে নেই সেই শিক্ষিকা ও তাঁর মেয়ে। ঘটনাকে ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে মালবাজারের চালসার পরিমলমিত্র নগরে।

বছর পঁয়ত্রিশের দীপ রায় গত সাত মাস ধরে পেশায় শিক্ষিকা লক্ষ্মী সিকদারের বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকতেন। সোমবার তাঁরই দেহ উদ্ধার হয় ঘর থেকে। পুলিসি তদন্তে জানা গিয়েছে, শিক্ষিকার এক মেয়ে রয়েছে। তিনি অবিবাহিত। সম্প্রতি তাঁর বিয়ের জন্য পাত্র দেখা শুরু করেছিলেন তিনি। ভাড়াটে দীপের সঙ্গে তাঁদের দুজনেরই মোটের ওপর ভালো সম্পর্ক ছিল।

গত ১৫ অগাস্ট বাড়ির প্রধান দরজায় তালা লাগিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাইরে যান শিক্ষিকা। বাড়িতে একাই ছিলেন দীপ। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে তাঁরও দেখা পাচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। দীপ কিছুটা অন্তর্মুখী হলেও, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, দিন দুয়েক ধরে এলাকায় পচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু ভ্যাটে কোনও পশুর দেহ ফেলা হয়েছে, সেখান থেকেই গন্ধ বেরোচ্ছে বলে মনে করছিলেন প্রতিবেশীরা।

সোমবার সকালে ভেদ হল রহস্য। স্থানীয় এক বাসিন্দা লক্ষ্মী সরদারের বাড়ির পিছনের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেইসময় দুর্গন্ধ নাকে আসে তাঁর। কৌতুহলবশত ঘরের একটা জানলা খোলা দেখেই উঁকি দেন তিনি। দেখেন, খাটের ওপর চিত হয়ে পড়ে রয়েছেন দীপ। সারা শরীরের ওপর দিয়ে মাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে। শরীর দিয়ে কষ বেরোতে শুরু করেছে।

বিষয়টি তত্ক্ষণাত্ মেটেলি থানায় জানান ওই ব্যক্তি। পুলিস এসে ঘরের দরজা ভেঙে দেহটি উদ্ধার করে। খবর দেওয়া হয় লক্ষ্মী সরদারকেও। পুলিসের ফোন পেয়ে সোমবার রাতেই বাড়ি ফিরে আসেন শিক্ষিকা। মৃতদেহ দেখে পুলিস বলছে, চার দিন আগে মৃত্যু হয়েছে দীপের। কিন্তু এই মৃত্যু যে স্বাভাবিক নয়, সেব্যাপারেও নিশ্চিত পুলিস।

দীপকে কি কেউ খুন করেছে, নাকি আত্মহত্যা করেছেন তিনি?  লক্ষ্মীর মেয়ের সঙ্গে কি কোনও সম্পর্ক ছিল দীপের? সে ব্যাপারেও খোঁজ খবর করছে পুলিস। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। লক্ষ্মী ও তাঁর মেয়ের পাশাপাশি স্থানীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস।