সন্ত্রাসের আগুনে পুড়ল ১২টি স্কুল


রাতের অন্ধকার থাকতে থাকতেই লাল হয়ে উঠেছিল পাকিস্তানের দিয়ামের জেলার চিলাস শহরের আকাশ। আগুনে লাল! আজ ভোর রাতে পাকিস্তানের ওই শহরে ১২টি স্কুল জ্বালিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা।

ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির মধ্যে অধিকাংশই মেয়েদের। অন্তত দু'টি স্কুলে দুষ্কৃতীরা বিস্ফোরণ ঘটায় বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদেরই এক জন জানান, কোনও কোনও জায়গায় স্কুল চত্বরে বই জড়ো করে তাতে আগুন লাগিয়েও তাণ্ডবলীলা চালায় দুষ্কৃতীরা। তবে ওই সময়ে স্কুলে কেউ না থাকায় হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। এই ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন ক্ষোভে ফেটে প়ড়েন স্থানীয়রা। সকাল থেকে দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ-অবরোধ।

কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত  তা এখনও স্পষ্ট করেনি পুলিশ। তবে সন্দেহের তির কট্টরপন্থী জঙ্গি দলগুলির দিকেই। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, সাক্ষরতায় মাপকাঠিতে অন্যান্য পাক প্রদেশের তুলনায় গিলগিট-বালুচিস্তানের চিলাস এখনও বেশ পিছিয়ে। তাই কিছু নতুন স্কুল তৈরির কাজ চলছিল। শুক্রবার দুষ্কৃতীতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির মধ্যে তেমন কিছু নির্মীয়মাণ স্কুলও রয়েছে।

স্কুলে হামলার ঘটনা পাকিস্তানে নতুন নয়। ২০০৪ সালের এক রাতে এই চিলাসেই ন'টি স্কুল জ্বালিয়ে দিয়েছিল জঙ্গিরা। ২০১১-তে আরও দু'টি স্কুলে তারা বিস্ফোরণ ঘটায়। বেছে বেছে মেয়েদের স্কুলগুলিকেই নিশানা করেছিল সন্ত্রাসবাদীরা। একটি সূত্রের খবর, গত দশ বছরে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলায় অন্তত ১৫০০টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পাকিস্তানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি বরাবর জঙ্গিদের 'সফট টার্গেট'। পড়ুয়াদের উপরেও বারবার হামলা চালিয়েছে তারা। কখনও পেশোয়ারের সেনা স্কুলে হত্যা লীলা চলেছে, তো কখনও নারী শিক্ষা প্রসারের প্রতীক পাক তরুণী মালালা ইউসুফজ়াইকে গুলি করে মারার চেষ্টা করেছে তালিবান জঙ্গিরা। প্রশাসনের আশ্বাস সত্ত্বেও বার বার একই ঘটনায় আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয় মানুষ।