শিশুকন্যাকে খুন করে বালতিতে চুবিয়ে দুর্ঘটনা প্রমাণের চেষ্টা, গ্রেফতার মা


মাত্র সাত মাসের মেয়ে। সে-ই নাকি আর্থিক অনটন নিয়ে এসেছে পরিবারে। এই অন্ধ বিশ্বাসেই শিশুকন্যাকে ওড়নার ফাঁস দিয়ে দমবন্ধ করে নৃশংস ভাবে খুন করলেন মা। খুনের পর আবার দুর্ঘটনার তত্ত্ব সাজাতে চুবিয়ে দিয়েছিলেন বালতিতে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। দিল্লির হজরত নিজামউদ্দিন থানা এলাকায় গত ২০ অগস্টের এই ঘটনায় মৃত শিশুর মা বছর সাতাশের মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০ অগস্ট সন্ধ্যায় আদিবা নামে ওই মহিলা সাত মাসের মেয়েকে মুলচাঁদ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তিনি জানান, বাথরুমে বালতির মধ্যে পড়ে জলে ডুবে গিয়েছিল শিশুটি। কিন্তু গলায় দাগ দেখে চিকিৎসকদের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর পাঠান তাঁরা। দিল্লির এইমস হাসপাতালে শিশুটির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।

গত ২৭ অগস্ট ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মেলে। জানা যায়, জলে ডুবে নয়, শ্বাসরোধের কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই শিশুর। শিশুটির পাকস্থলি বা শরীরের ভিতরে কোথাও জল পাওয়া যায়নি। জলে ডুবে মৃত্যুর অন্য কোনও লক্ষণ ছিল না।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই নতুন করে তদন্তে নামে পুলিশ। ওই মহিলার বাড়িতে গিয়ে বাথরুমে থাকা একটি বালতি-সহ বেশ কিছু সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত হয়। এরপরই ওই মহিলাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়ে খুনের কথা কবুল করেন মহিলা।

পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে মহিলা জানান, ওই দিন বিকেলে মেয়ে আর তিনি ছাড়া আর কেউ বাড়িতে ছিলেন না। মেয়ে তখন অঘোর ঘুমে। ওই অবস্থাতই মেয়ের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিনি। তারপর মৃত অবস্থাতেই বাথরুমে নিয়ে গিয়ে বালতির জলের মধ্যে ফেলে দেন। বাড়ির সামান্য দূরে স্বামীর দর্জির দোকানে ছুটে গিয়ে মেয়ের বালতিতে পড়ে যাওয়ার কথা জানান। এরপরই মৃত শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালে যান তাঁরা।

জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগেই হজরত নিজামউদ্দিন এলাকার পেশায় দর্জি যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। মাস সাতেক আগে একটি মেয়ে হয় তাঁদের। কিন্তু তারপর থেকেই নাকি পরিবারে রোগভোগ এবং আর্থিক অনটন শুরু হয়। মহিলার মধ্যে অন্ধ বিশ্বাস জন্মায়, পরিবারের এই দুর্দশার কারণ ওই শিশুকন্যা। তার জেরেই তিনি খুন করেছেন বলে জানান মহিলা।