সরকারের নজর রং করায়, সরব বিরোধীরা


পাঁচ বছরে চারটি সেতুর দুর্ঘটনা। তার মধ্যে কলকাতা শহরেই তিনটে। এমন দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তির পিছনে রক্ষণাবেক্ষণের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন বিরোধী নেতারা। প্রায় একই সুরে সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার সেতু বা রাস্তাঘাটে নীল-সাদা রং করার দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে। দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিচ্ছে না। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা আবার তৃণমূল সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।

দুর্ঘটনার খবর পেয়েই মঙ্গলবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘটনাস্থল এবং এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন দুই মন্ত্রী এবং সব বিরোধী দলের নেতারা। দুর্ঘটনার জেরে বিজেপি কাল, বৃহস্পতিবার তাদের ঘোষিত মহামিছিল স্থগিত রেখেছে। কংগ্রেসও আজ, বুধবার তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করেছে। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ''নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দফতর, পোর্ট ট্রাস্ট, কখনও মেট্রো— একে অপরের দিকে দোষ দেওয়া শুরু হয়েছে।

এখন দোষারোপের পালা বন্ধ রেখে আগে উদ্ধার অভিযান সম্পূর্ণ হোক।'' তবে একই সঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ''সেতুগুলোর স্বাস্থ্যপরীক্ষার রিপোর্ট তো বিশেষ ভাল নয়। কিন্তু সরকারের সে দিকে নজর নেই। তারা নীল-সাদা রং করতে ব্যস্ত! অবস্থা এমন হয়েছে যে, মানুষ সেতুর উপর বা নীচে দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পাচ্ছেন! সরকারের দায়িত্ব এই আতঙ্ক কাটানো।''

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ''মুখ্যমন্ত্রী শুধু চমক দেওয়ার রাজনীতিতে ব্যস্ত। এখানে ওখানে নীল-সাদা রং করেন। কিন্তু রং করলেই যে পরিস্থিতি বদলায় না, তার প্রমাণ মাঝেরহাট সেতুর এই দুর্ঘটনা! এত পুরনো একটা সেতু উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু সরকারের তো চমকদারিতে মন।'' বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেছেন, ''পূর্ত দফতরকে জবাব দিতেই হবে। বর্ষার আগে অডিট করা নিয়ম, সরকারের গাফিলতি অনেক আছে। যে সরকার মানুষের জান-মান রক্ষা করতে পারে না, তার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই!''

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীরও বক্তব্য, ''হৃদয়বিদারক ঘটনা। বাংলার সিন্ডিকেট-রাজের কুফল! উল্টোডাঙা, বড়বাজার, শিলিগু়ড়িও হয়েছে। সরকার সতর্ক হলে এই ঘটনা ঘটত না।''