অটোমেটিক স্নাইপার রাইফেল তৈরি করল ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টারি


বারাকপুর: দেশের নিরপত্তার স্বার্থে কারখানার আধুনিকীকরণের উদ্দেশ্যে অত্যাধুনিক ৭.৬২ এমএম অটোমেটিক স্নাইপার রাইফেল তৈরি করল ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টারি৷ অস্ত্র পাচার কাণ্ডের পর এই কারখানায় তৈরি করা হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তাবলয়৷

বুধবার বনধের দিন ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষের ১১৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়৷ সেখানেই এই কথা জানালেন ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির নতুন জেনারেল ম্যানেজার ডি মহাপাত্র। যদিও রাইফেল ফ্যাক্টরিতে নির্মিত নতুন এই অত্যাধুনিক বড় কার্তুজের স্নাইপার রাইফেল এখনও বাজারে আসেনি। অত্যাধুনিক এই অটোমেটিক স্নাইপার রাইফেল ভারতীয় সেনা বাহিনীর জওয়ানরা ব্যবহার করবে৷

বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভারতীয় সেনা জওয়ানরা বা বিএসএফ জওয়ানরা এখন ৫.৫৬ বোরের অটোমেটিক ইনসাস রাইফেল ব্যবহার করেন৷ কিন্তু ৭.৬২ বোরের নতুন অটোমেটিক স্নাইপার রাইফেল তৈরি করে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ নিজেদের কর্মদক্ষতার আত্মপ্রকাশ ঘটলো। বর্তমানে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ চলতি বছরে ১০০ টি অত্যাধুনিক ৭.৬২ এমএম x ৫১ এমএম বোরের নতুন স্নাইপার রাইফেল তৈরি করেছে। সেই স্নাইপার রাইফেলের কার্যকারিতাও পরীক্ষামূলক ভাবে সংবাদ মাধ্যমকে দেখানো হয়৷

নতুন এই স্নাইপার রাইফেলের বর্তমান বাজারমূল্য নির্ধারিত হয়েছে ২.৮ লক্ষ টাকা। ওজনেও হাল্কা নতুন এই অটোমেটিক স্নাইপার রাইফেল। বর্তমানে এনএসজির জওয়ানরা কোন কোন ক্ষেত্রে আতঙ্কবাদীদের নিকেশ করতে এই ধরনের স্নাইপার ব্যবহার করে থাকেন। তবে এখনও দেশের জওয়ানরা এই অত্যাধুনিক অটোমেটিক স্নাইপার রাইফেল হাতে পায়নি। ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে নতুন এই অটোমেটিক স্নাইপার রাইফেলের বিষয়টি বাজারজাত করা নিয়ে কথা বলেছে রাইফেল ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ। এই রাইফেলটি আগামী দিনে দেশের জওয়ানদের হাতে দেখা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির জেনারেল ম্যানেজার ডি মহাপাত্র। তবে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেলের বরাত পেয়েছে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ।

এবার নতুন স্নাইপার তৈরি করে দেশের নিরাপত্তাকে আরও সুনিশ্চিত করতে চাইছে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রকের অধীনস্থ রাইফেল প্রস্তুতকারী ইছাপুরের এই সংস্থা। এদিকে সম্প্রতি এই কারখানার দুজন কর্মী সহ মোট ছয় জন অস্ত্র পাচার কাণ্ডে রাজ্যের এসটিএফের হাতে ধরা পড়েছিল। সেই ঘটনায় ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির গরিমা অনেকটাই নষ্ট হয়েছে। সুখদা মুরমু এবং সুশান্ত বসু এই দুই কর্মী সরাসরি এই কারখানার সঙ্গে যুক্ত ছিল। বর্তমানে তারা রয়েছেন এসটিএফের হেফাজতে।

বর্তমানে এই কারখানার জেনারেল ম্যানেজার ডি মহাপাত্র সেই প্রসঙ্গে এই প্রথম সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন তাঁরা৷ তিনি বললেন, 'আমরা ভাবতেও পারিনি আমাদের কারখানার কোন কর্মী এই রকম চুরির ঘটনায় যুক্ত থাকতে পারে। ওই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এই অস্ত্র কারখানার নিরাপত্তা আরও বাড়িয়েছি। এখন অস্ত্র তৈরির সব জায়গা কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে রাখা হয়েছে। অতিরিক্ত সিসিটিভি সর্বত্র বসানো হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কারখানা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিভাগীয় তদন্তও চলছে। এসটিএফকে তদন্তে আমরা সবরকম সহযোগিতা করছি।'