মাঝরাতে দরজা খুলে দেন স্ত্রী! প্রেমিকের হাতে ফ্ল্যাটের মধ্যে নৃশংসভাবে খুন স্বামী

সুরজিত ওরফে বিজয় সিং

বারাসতের মনুয়াকাণ্ডের ছায়া হুগলীর হিন্দমটরে। ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হল মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির দেহ। স্বামীকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। মৃতের নাম সুবোধ হাজরা। প্রাথমিকভাবে অনুমান, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই সুবোধ হাজরাকে খুন করা হয়েছে। খুনের ঘটনায় প্রতিবেশী যুবক বিজয় সিংকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে মৃতের স্ত্রীকেও।

হিন্দমটরের বিবি স্ট্রিটে দেবী অ্যাপার্টমেন্টে স্ত্রী গৌরী হাজরাকে নিয়ে থাকতেন সুবোধ হাজরা। শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ নিজের ফ্ল্যাটের মধ্যেই খুন হন সুবোধ হাজরা। মাথায় কোপ মেরে গলা কেটে খুন করা হয় তাঁকে। প্রতিবেশী যুবক সুরজিত ওরফে বিজয় সিং তাঁর স্বামী সুবোধ হাজরাকে খুন করেছে বলে এরপর ভোর ৪টে নাগাদ উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুবোধবাবুর স্ত্রী গৌরী হাজরা। স্বামীর খুনের কথা ফোন করে জানান আত্মীয়দের। তদন্তে নেমে পুলিস প্রথমেই গ্রেফতার করে সুরজিতকে। তবে, স্বামী সুবোধ হাজরার খুনের পিছনে স্ত্রীর গৌরীদেবীরও হাত রয়েছে বলে প্রথমেই সন্দেহ হয় পুলিসের। স্ত্রী গৌরীদেবীর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে তাই তাঁকেও আটক করেছে পুলিস। আটক করা হয়েছে আরও ২ জনকে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।

পাড়া-প্রতিবেশী ও বন্ধু সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর সুবোধ হাজরার সঙ্গে মোটেই ভালো সম্পর্ক ছিল  না স্ত্রী গৌরীদেবীর। এমনকি প্রতিবেশীদের অভিযোগ, পড়শি যুবক বছর ২৪-এর সুরজিত ওরফে বিজয় সিংয়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল গৌরীদেবীর। গত ৭-৮ মাস ধরে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য অশান্তি লেগে থাকত। প্রায়শই গন্ডগোল হত দুজনের মধ্যে। শুক্রবার রাতেও দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির আওয়াজ পান পড়শিরা। এরপরই রাতে খুন হয়ে যান সুবোধ হাজরা। সুবোধবাবুর এক বন্ধু দাবি করেছেন, এই খুনের পিছনে নিশ্চিতভাবেই গৌরীদেবীর হাত রয়েছে। তিনি-ই ফ্ল্যাটের পিছনের দরজা খুলে দিয়ে প্রেমিক সুরজিত্কে ঘরে ঢুকতে দেন বলে অভিযোগ তাঁর।

শনিবার সকালে সুবোধবাবুর ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তুলসি মঞ্চেও রক্তের দাগ। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে পাঠিয়েছে।