ছাত্রছাত্রী নেই, বন্ধের মুখে রাজ্যের বহু প্রাথমিক স্কুল!


মাধ্যমিকের পরে এ বার প্রাথমিক! ছাত্রছাত্রীর অভাবে আবার বেশ কিছু স্কুলে তালা ঝোলানোর তোড়জোড় চলছে বলে শিক্ষা শিবিরের আশঙ্কা। তাদের সংশয়-আশঙ্কার মূলে আছে স্কুলশিক্ষা দফতরের একটি বিজ্ঞপ্তি।

সম্প্রতি বিকাশ ভবন থেকে একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও পোষিত স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অনুপাত ঠিক করতে হবে। যে-সব স্কুলে বাড়তি শিক্ষক রয়েছেন, সেখান থেকে তাঁদের পাঠাতে হবে শিক্ষক-ঘাটতির স্কুলে। সেই সঙ্গে সাফ জানানো হয়েছে, যে-সব স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কুড়ির কম, তাদের পড়ুয়ারদের বাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনও স্কুলে সরিয়ে দিতে হবে। এই নির্দেশ কার্যকর হবে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই। যে-সব স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই, কাছাকাছি কোনও স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে সেখানকার দায়িত্ব দিতে হবে। পরে স্কুলভবনগুলিকে শিক্ষা সংক্রান্ত কাজে বা অন্য মাধ্যমের স্কুলের বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই গোটা প্রক্রিয়ার জন্য জেলা স্তরে এবং কলকাতার জন্য আলাদা কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার ক্ষেত্রে চার সদস্যের কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন জেলাশাসক বা অতিরিক্ত জেলাশাসক। আহ্বায়ক হবেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক)। সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান এবং সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক। কলকাতার কমিটির চেয়ারম্যান হবেন স্কুলশিক্ষা কমিশনারের কোনও প্রতিনিধি। তবে তিনি যুগ্ম অধিকর্তা পদের নীচের কোনও পদাধিকারী হবেন না। বাকি সব জেলার মতোই। আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পড়ুয়ার অভাবে ইতিমধ্যে কলকাতা ও হাওড়ায় বেশ কিছু স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিতে হয়েছে। কোনও কোনও স্কুলে এক জনও পড়ুয়া ছিল না। আবার কোথাও ৮-১০ জন পড়ুয়া নিয়ে স্কুল চলত। ওই সব ক্ষেত্রে স্কুল বন্ধ করে পড়ুয়াদের অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সেটাই করা হবে বলে আশঙ্কা শিক্ষা শিবিরের।

শিক্ষক-নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ''স্কুলের পরিকাঠামো ও পঠনপাঠন ঠিক না-হলে এই দৃশ্যই দেখে যেতে হবে। এটা দুর্ভাগ্যের।'' নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তী বলেন, ''ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনার আগেই স্কুলগুলিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। তা ছা়ড়া সরকারের জমি যাতে বেহাত হয়ে না-যায়, লক্ষ রাখতে হবে সে-দিকেও।''