নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন প্রেমিকের।

তেহট্ট:  টাকার লোভে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন। খুনের অভিযোগ উঠল প্রেমিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নাবালিকাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের পর শ্বাসরোধ করে খুন করে প্রেমিক। তারপর নাবালিকার কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয়। মৃত ছাত্রীর নাম আনেহার খাতুন। সে স্থানীয় পাটপুকুর স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সোমবার বাড়ির অদূরের কলাবাগান থেকে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নাকাশিপাড়ায়।

মৃত ছাত্রীর বাবা আবদুর রহমান জানান, রবিবার সন্ধ্যা নাগদ একটা ফোন আসে মেয়ের মোবাইলে। কিছুক্ষণ কথা বলার পরই সে বাথরুমে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় পাঁচ হাজার টাকা, একটা ব্যাগ ও আধার কার্ড মেয়ের সঙ্গে ছিল। পরে দীর্ঘক্ষণ মেয়ের খোঁজ না পাওয়ায় আনেহারের মা ঘরে গিয়ে দেখেন পাঁচ হাজার টাকা, আধার কার্ড ও একটি ব্যাগ নেই। তখনই বুঝতে পারেন মেয়ে পালিয়ে গিয়েছে। স্বামী অশান্তি করতে পারে ভেবে তাঁকে দোকানে চা খেতে পাঠিয়ে দেন তিনি। এদিকে রাতভর মেয়ে না ফেরায় চিন্তিত দম্পতি সকালেই খোঁজখবর শুরু করেন। সেই সময় স্থানীয়রা বাড়ির কাছের কলাবাগানে আনেহারের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি জানাজানি হতে সময় নেয়নি। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ছাত্রীর নিথর দেহ পড়ে আছে। কলাগাছের ছাল দিয়ে বাঁধা দুটি হাত। সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় থানায় খবর যায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে সম্প্রতি এক নির্মাণ শ্রমিকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় ওই ছাত্রী। এলাকায় তাদের একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত। প্রতিবেশীরা দেখলেও এদৃশ্য কখনও বাবা-মায়ের চোখে পড়েনি। তাঁরা লোকমুখে শুনেছেন। মেয়ের পড়াশোনায় মন থাকায় তাকে আর এনিয়ে বিব্রত করেননি। তবে ঘুণাক্ষরেও টের পাননি মেয়ে পালাবে। সেজন্যই যে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল তা স্পষ্ট। তবে প্রেমিকের মনে ছিল অন্যকিছু। তাই বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাঁচ হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে নাবালিকাকে খুন করে চম্পট দিল। ইতিমধ্যেই ওই নির্মাণ শ্রমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের অভিভাবকরা। বাড়ি থেকে বেরনোর সময় আনেহারের কাছে মোবাইল ফোনটি ছিল। সেটিও উধাও। সেই ফোনের সূত্র ধরেই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এদিকে হাসিখুশি মেয়ের এহেন মর্মান্তিক পরিণতিতে এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।