আজ থেকে ৩ দিন অবধি ছুটি বাতিল রাজ্য সরকারি কর্মীদের


বন্‌ধের নামে কর্মনাশ নয়। জনজীবনের চাকা গড়াবে আর পাঁচটা দিনের মতোই। এই প্রত্যয় নিয়েই কাল বুধবার বিজেপির ডাকা বাংলা বন্‌ধ মোকাবিলায় কড়া নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য প্রশাসন। ২৬ সেপ্টেম্বরের পাশাপাশি ২৫ ও ২৭ তারিখেও ছুটি নিতে পারবেন না রাজ্য সরকারের কর্মীরা। তেমনই ২৪ তারিখ অর্থাৎ সোমবার আগাম ছুটি নেওয়া থাকলে বন্‌ধের দিন অবশ্যই হাজিরা দিতে হবে। নবান্নের অর্থ দপ্তরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সেদিন অর্ধদিবসও ছুটি নেওয়া যাবে না। গরহাজিরদের বেতন কাটা যাবে, কর্মদিবস থেকেও বাদ যাবে একটি দিন। সরকারি স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যাবে না বলে সোমবারই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
 
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, "বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছেও সচল রাখার আবেদন জানাচ্ছি। একটিমাত্র স্কুলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্যে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে বিজেপি। এই চেষ্টা মানুষ সফল হতে দেবেন না। এর আগেও বিরোধীদের ডাকা বন্‌ধকে ব্যর্থ করেছেন বাংলার মানুষ।" বন্‌ধের দিন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়-সহ যেখানে পরীক্ষা চলছে, সেখানে নির্বিঘ্নে যাতে ছাত্রছাত্রীরা পৌঁছতে পারেন, তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিবহণ দফতর আবার বিমার ব্যবস্থা করেছে। দফতরের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানান, বাস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা আগুন লাগানো হলে ৬ লক্ষ টাকা অবধি দেবে রাজ্য সরকার। বুধবার চলবে ২৬০০ সরকারি বাস। থাকবে ৫০-৬০টি ভেসেল। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের ২৫, উত্তরবঙ্গ নিগমের ৪৫, দক্ষিণবঙ্গ নিগমের ১৯টি ডিপোয় বাড়তি বাস থাকবে। ভোর পাঁচটা থেকেই সরকারি বাস রাস্তায় নামবে। জেলাগুলিতে আলাদা করে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। রাজ্যের মূল কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর, ০৩৩-২৪৪২০২৭৮। পরিবহণমন্ত্রীর বক্তব্য, "বেসরকারি বাসও রাস্তায় নামবে বলে জানিয়েছে। তবে গাড়ি বন্ধ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

এদিন নবান্নে পার্থবাবু মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, "আমরা নিশ্চিত, রাজনৈতিক হতাশার কারণেই বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে বিজেপি। এখন পরীক্ষার সময়। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনও চলছে। বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্যই এখন বন্‌ধ ডাকা হয়েছে।" নবান্নের হাজিরা নির্দেশিকায় অবশ্য স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনও কর্মী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে, পরিবারের নিকটজনের মৃত্যুতে বা অসুস্থতার কারণে ২৪ তারিখের আগে টানা ছুটি নেওয়া থাকলে ছাড় পাবেন কর্মীরা। সন্তানপালনের ছুটি, মাতৃত্বকালীন বা মেডিক্যাল লিভ এবং আগে থাকতে 'ই এল' নেওয়া থাকলেও ছাড় মিলবে। অন্যথা, বিভাগের প্রধান 'শোকজ' চিঠি পাঠাবেন। এদিনই তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিশ আলি বিজেপির ডাকা বন্‌ধকে বেআইনি ঘোষণা করার দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। বিকেলের দিকে একই ইস্যুতে আর একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আজ, কলকাতা হাই কোর্টে এই মামলাগুলির শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা।