‌সপ্তম শ্রেণি পাস ২০ লক্ষ মানুষকে ঠকিয়ে তুলেছে ৩০০০ কোটি‍‌!‌


তিন হাজার কোটি টাকার প্রতারণার মূল চক্রান্তকারীকে পাকড়াও করল হায়দরাবাদের সাইবারাবাদ পুলিস। হরিয়ানার হিসার থেকে রাধেশ্যাম নামে ওই ব্যক্তি এবং তার সাগরেদ সুরেন্দর সিং–কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কমপক্ষে ২০ লক্ষ মানুষকে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।
সাইবারাবাদের পুলিস কমিশনার ভিসি সজ্জনার জানালেন, সপ্তম শ্রেণির পর আর পড়েনি রাধেশ্যাম। তিন বছর আগে সে এবং তার কয়েকজন সঙ্গী মিলে ফিউচার মেকার লাইফ কেয়ার গ্লোবাল মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি অর্থ লগ্নি কোম্পানি খুলেছিল। গ্রাহকদের তারা বলেছিল, ৭৫০০ টাকা দিয়ে কোম্পানিতে লগ্নি করলে দুবছরের মধ্যে ৬০০০০ টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। গ্রাহকরা যদি আরও দুজন লগ্নিকারীকে আনতে পারেন তাহলে তাঁরা ৫০০ টাকা কমিশন পাবেন এবং দুবছরে প্রতি মাসে আড়াই হাজার টাকা করে পাবেন। রাধেশ্যাম মূলত অন্ধ্র প্রদেশ, তেলঙ্গানা, হরিয়ানা, দিল্লি, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং ওড়িশার কর্মহীন যুবকযুবতী, গৃহবধূ এবং অবসরপ্রাপ্তদের ঘরে বসে পার্টটাইম রোজগারের কথা বলে তাঁদের জালে ফেলত। প্রথমে উত্তর ভারতে প্রতারণা করে গত তিন মাস আগে হায়দরাবাদে ঘাঁটি গেড়েছিল রাধেশ্যামরা। ইতিমধ্যেই সেখানেও ২০,০০০ গ্রাহক জোগার করেও ফেলেছিল তারা। রাধেশ্যামদের জালিয়াতির কথা প্রথমে সামনে আসে তাদেরই এক লগ্নিকারীর মাধ্যমে। হায়দরাবাদের কুকাটপল্লি থানায় ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন এই মর্মে যে, তাঁকে যে টাকা ফেরতের কথা বলা হয়েছিল তা দেওয়া হয়নি। তারপরই তদন্তে নেমে পুলিস এই চক্রের খোঁজ পায়।
সজ্জনার জানালেন, প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, রাধেশ্যামরা ১২০০ কোটি টাকার প্রতারণা করেছে। কিন্তু তদন্তে নেমে জানা যায় প্রতারণার টাকার অঙ্ক ৩০০০ কোটি টাকা। আরবিআই–কে চিঠিতে সজ্জনার বলেছেন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি এভাবে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির উপর নজরদারি চালাতে ব্যর্থ হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে এই ভুয়ো কোম্পানির ২০০ কোটি টাকা জমা করেছে বলেও আরবিআই–কে জানিয়েছেন সজ্জনার। হিসারে রাধেশ্যামের বাড়ি এবং গোডাউনে তল্লাশি চালিয়ে ৬০ লক্ষ টাকা, একটি রিভলভার, ১০ রাউনড কার্তুজ, তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করেছে পুলিস।