ডিএ-রায়: ‘ঘেউ ঘেউ’ মন্তব্য ফিরিয়ে নিন মুখ্যমন্ত্রী, বলছে সব বিরোধী



বড়সড় ধাক্কা রাজ্য সরকারের জন্য। কলকাতা হাইকোর্ট শুক্রবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল, মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) পাওয়া সরকারি কর্মীদের আইনসিদ্ধ অধিকার। আর এই রায়ে জেনেই বিরোধীরা সম্মিলিত ভাবে বহুচর্চিত 'ঘেউ ঘেউ' মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। ওই মন্তব্যের জন্য এ বার ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী, উঠল এমন দাবিও।

আইএনটিইউসি অনুমোদিত কর্মী সংগঠন 'কনফেডারেশন'-এর মামলার প্রেক্ষিতেই মূলত এই রায় দিল হাইকোর্ট। রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিচ্ছে না এবং বিপুল পরিমাণ ডিএ বকেয়া পড়েছে— এই অভিযোগ তুলে প্রথমে রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের (স্যাট) দ্বারস্থ হয় কনফেডারেশন। কিন্তু স্যাটে রাজ্য সরকার জানায়, ডিএ কর্মীদের অধিকার নয়। বরং তা সরকারের ইচ্ছার উপরে নির্ভরশীল। স্যাটও সরকারের সেই তত্ত্বেই সিলমোহর দেয়। তার পরেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কর্মী সংগঠন। ১৭ মাস শুনানি চলার পরে কিছু দিনের জন্য রায় রিজার্ভ রেখেছিল আদালত। শুক্রবার হাইকোর্ট জানাল, স্যাটের রায় খারিজ করা হচ্ছে। ডিএ অবশ্যই কর্মীদের অধিকার, তা সরকারের 'দয়ার দান' নয়।

এই রায়কে কর্মী সংগঠনগুলি স্বাগত জানাচ্ছে। ডিএ-কে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা গিয়েছে, এটা খুব বড় জয়— বলছে কনফেডারেশন বা সরকারি কর্মচারী পরিষদের মতো সংগঠনগুলি। কিন্তু ডিএ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের নিষ্পত্তি কিন্তু হাইকোর্টে হয়নি। কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা সিপিআই মেনে ডিএ-র হার নির্ধারিত হবে কি না, বছরে ক'বার ডিএ ঘোষণা হবে, কোন সময়ে ডিএ ঘোষণা হবে, কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুসরণ করেই রাজ্য চলবে কি না— সে সব প্রশ্নের নিষ্পত্তি হওয়া এখনও বাকি। হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন যে হেতু এ নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়নি, সে হেতু হাইকোর্ট এ দিন ওই সব বিষয়ে কোনও রায় দেয়নি। ডিএ-কে সরকারি কর্মীদের অধিকার হিসেবে মান্যতা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, বাকি প্রশ্নগুলির মীমাংসা স্যাট-ই করবে।