ভারতের জন্য তেল আমদানির বিকল্প পথ খুঁজছে আমেরিকা

হুঁশিয়ারিতে কাজ হয়েছে। ইরান থেকে তেল আমদানি কমিয়েছে ভারত। খোঁজ চলছে বিকল্প রাস্তার। তাতে নাকি প্রসন্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র! এ ব্যাপারে ভারতকে সাহায্য করতে প্রস্তুত তারা। সেই মতো কথাবার্তা চালাচ্ছে। যাতে 'বন্ধুরাষ্ট্র'র অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে।

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া অঞ্চল সংক্রান্ত ব্যুরোর প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস। তিনি বলেন, ''নয়া নিষেধাজ্ঞা চালু করা নিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আলোচনা চলছে ওয়াশিংটনের। ভারতের ক্ষেত্রে অপরিশোধিত তেলের আমদানি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝি আমরা। সেই নিয়েও আলোচনা চলছে। যাতে কোনও বিকল্প পথ খুঁজে বের করা যায় এবং আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।''

ভারতের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও বিকল্প পথের খোঁজ শুরু করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যালিস। নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়েও নাকি কথা চলছে দুই দেশের আধিকারিকদের মধ্যে।কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবইন্দো-ইরান চাবাহার বন্দর প্রকল্পের উপর পড়বে না তো? অ্যালিসের কথায়:''বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত বিভিন্নভাবে আফগানিস্তানকে সাহায্য করেছে ভারত। এমনকি, চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে গম পৌঁছে দিয়েছে সে দেশে। চাবাহার বন্দর পেয়ে আফগানিস্তানেরও লাভ হয়েছে। বৈচিত্র্য এসেছে তাদের বাণিজ্যে। পর্যালোচনায় এই সব কিছুকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।''

২০১৬-র মে মাসে ভারত, ইরান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যাতে বলা হয়, সমুদ্রপথে পণ্য আমদানি-রফতানি করতে তিনটি দেশই চাবাহার বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। ওই বন্দর দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন তিন দেশের মানুষও। কিন্তু পুরনো নিষেধাজ্ঞা জারি থাকাকালীনই চলতি বছরের শুরুতে ইরানের উপর কিছু নয়া নিষেধাজ্ঞা আনার কথা ঘোষণা করে মার্কিন সরকার। যা আগামী৪ নভেম্বর থেকে চালু হবে।

রাষ্ট্রপুঞ্জে এই নয়া নিষেধাজ্ঞা মান্যতা না পেলেও, নিজেদের অবস্থানে অনড় ট্রাম্প সরকার। বাকি দেশগুলিকে ইতিমধ্যে হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে তারা। বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে ইরানের সঙ্গে লেনদেন চালিয়ে গেলেচরম ভুগতে হবে। সবরকম আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেবে ওয়াশিংটন। এমনিতে শুধুমাত্র রাষ্ট্রপুঞ্জ অনুমোদিত নিষেধাজ্ঞাই মানতে বাধ্য ভারত। তবে মার্কিন হুঁশিয়ারিতে দুশ্চিন্তা বাড়ে নয়াদিল্লির।তাই তড়িঘড়ি জানিয়ে দেওয়া হয়, ইরান থেকে তেল আমদানি ইতিমধ্যেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। চাহিদার কথা মাথায় রেখে একেবারে বন্ধ করা হয়তো সম্ভব হবে না। তবে বিকল্প রাস্তার খোঁজ চলছে।