মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে ইরান থেকে তেল কিনবে ভারত

তেহরানঃ  ইরান থেকে তেল কেনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। সেই নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে ইতিমধ্যে ইরান থেকে তেল কেনা হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে চিন। ভারতও ইরান থেকে তেল কেনার ক্ষেত্রে অন্যতম ক্রেতা। কিন্তু মার্কিন এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারত ইরান থেকে তেল কিনবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ ছিল। অবশেষে সেই উদ্বেগ কাটল। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে ইরানের বিদেশমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন যে, ভারত ইরান থেকে তেল কিনবে এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

রাষ্ট্রসংঘে এই বিষয়ে আলোচনায় বসে ভারত এবং ইরান। উপস্থিত ছিলেন সুষমা স্বরাজ এবং ইরানের বিদেশমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ। বৈঠক শেষে জারিফ জানান, ভারত ইরান থেকে তেল কিনবে এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, গত মে মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকাকে ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন এবং দেশটির উপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। এছাড়াও ইরানের তেল রফতানি শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে ট্রাম্প প্রশাসন দেশটির উপর নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, যা আগামী ৪ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। শুধু তাই নয়, এই নিষেধাজ্ঞা যে দেশ মানবে না সেই দেশের উপর কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, বিশ্ববাজারে তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে তিনি 'অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ' (ওপেক) কে তেল উ‍ৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ওপেক ভূক্ত দেশ ইরান তৃতীয় বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী। তাদের তেল রফতানি বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। ভারত তেল কেনার বিষয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জারিফ বলেন, "আমাদের ভারতীয় বন্ধুরা তাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্য অনুযায়ী ইরান থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে সবসময়ই নিরপেক্ষ থাকবেন।"

প্রসন্তত, চিনের পর ভারত ইরান থেকে সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করে। আর ভারতে তেল সরবরাহকারী দেশের মধ্যে ইরান তৃতীয়। যদিও ভারত এরই মধ্যে ইরান থেকে তেল আমদানি হ্রাস করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা ইরান থেকে তেল কেনা বন্ধ করার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। বরং এই অর্থ বছরে ভারত সরকার ইরান থেকে তেল আমদানি বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে। কারণ, তেহরান দেশটিকে প্রায় বিনামূল্যে তেল পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তাছাড়া তেলের দাম পরিশোধের সময়ও বাড়িয়েছে।