দুই হিন্দু নেতাকে খুনের ষড়যন্ত্র, তামিলনাড়ুতে গ্রেফতার ৫ জঙ্গি

হিন্দু নেতা খুনের দায়ে ধৃত ৫।

দুই কট্টরপন্থী হিন্দু নেতাকে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তূরে গ্রেফতার করা হল ৫ জঙ্গিকে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ধৃতদের মধ্যে একজন সক্রিয় আইসিস সদস্য।

কট্টরপন্থী হিন্দুদের সংগঠন হিন্দু মক্কাল কাটচি-র নেতা অর্জুন সম্পত এবং আরেক সংগঠন হিন্দু মুন্নানি-র নেতা মুকাম্বিকাই মানি, এই দু'জনই ছিলেন ধৃতদের টার্গেট। পরিকল্পনা মাফিক শনিবারই চার জঙ্গি চেন্নাই থেকে আলাপ্পুঝা এক্সপ্রেসে এসে পৌঁছয় কোয়ম্বত্তূর। আরেক জন এসেছিল তাদের স্টেশনে 'রিসিভ' করতে। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু সেই খবর আগে থেকেই ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। কোয়ম্বত্তূর স্টেশনে পৌঁছতেই পাঁচজনকে গ্রেফতার করে কোয়ম্বত্তূর পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের সদস্যরা।

চব্বিশ ঘন্টা লাগাতার জেরার পর বেশ কিছু তথ্য এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে। জানা গিয়েছে, দুই হিন্দু নেতাকে খুনের পাশাপাশি আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর গণেশ চতুর্থীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। ধৃতেরা হল আর. আশিক (২৫), জাফর আলি (২৯), ইসমাইল (২৫), সামসুদ্দিন (২০) এবং সালাবুদ্দিন (২৫)। তাদের কাছ থেকে কিছু চাপাতিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা দায়ের করেছে কোয়ম্বত্তূর পুলিশ। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

হিন্দু মক্কাল কাটচি আর হিন্দু মুন্নানি, এই দুই সংগঠনই কট্টরপন্থী তামিল হিন্দুদের বিতর্কিত সংগঠন। গো-নিধন নিষিদ্ধ করা, অযোধ্যা, কাশী আর মথুরায় বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণ, দেশজুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা,  দলিত খ্রিস্টান ও দলিত মুসলিমদের হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে নেওয়া-সহ বিভিন্ন দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব এই দুই সংগঠন। কট্টরপন্থী মুসলিম সংগঠনগুলির সঙ্গে তাদের বিরোধও সেই কারণেই।এই দুই সংগঠনের আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তামিলনাড়ুতে। নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য প্রতি বছর গণেশ চতুর্থীর দিনটিকেই বেছে নেয় তারা।

গত তিরিশ বছরে অন্তত পাঁচ জন হিন্দু মুন্নানি নেতা খুন হয়েছেন কট্টরপন্থী মুসলিম জঙ্গিদের হাতে। প্রতিটি মৃত্যুর পরই ব্যাপক দাঙ্গার মুখোমুখি হয়েছিল তামিলনাড়ু। এ বারও সেই লক্ষ্যই ছিল ধৃতদের, এমনটাই অনুমান কোয়ম্বত্তূর পুলিশের।