২২-এর হৃদয় বসল ৫২-এর বুকে


ফের হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনে নজির গড়ল কলকাতা। গ্রিন করিডরের মাধ্যমে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে হৃদযন্ত্র এল বাইপাসের ফর্টিস হাসপাতালে। বছর ২২-এর যুবকের হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপতি হল ৫২ বছরের প্রৌঢ়ের শরীরে। হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া প্রাথমিকভাবে সফল। তবে প্রতিস্থাপিত হৃদযন্ত্র গ্রহীতার শরীরে আদৌ কার্যকরী হচ্ছে কিনা তার জন্য ৯৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।

জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল অস্ত্রোপচার করেছেন। সেই ছ'জনের দলে ছিলেন দিলচাঁদ সিংয়ের অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেওয়া চিকিৎসক তাপস চৌধুরি। তাপসবাবুর সঙ্গে ছিলেন সেদিনের প্রতিনিধি দলও। শুধু নতুন সংযোজন চেন্নাইয়ের খ্যাতনামা চিকিৎসক বালা সুভ্রমণিয়ম। রাতেই অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে দমদম বিমানবন্দরে হৃদযন্ত্র পৌঁছানোর পর মাত্র ১৬ মিনিটেই তা চলে আসে ফর্টিসে। গ্রিন করিডরের মাধ্যমে মাত্র ১৬ মিনিটে ১৮ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করেছেন সংশ্লিষ্ট অ্যাম্বুল্যান্সের চালক। তারপর রাতভর চলেছে অস্ত্রোপচার। ভোর তিনটে নাগাদ অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে। প্রথমে চিকিৎসকদের দল এনিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে জানা গিয়েছে প্রাথমিকভাবে প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে। হৃদযন্ত্রটি আদৌ সমীরণবাবুর শরীর নিতে পারল কি না তার জন্য ৯৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। এরমধ্যে প্রথম ৭২ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ৭২ ঘণ্টা কাটলে তারপরই হয়তো বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সোমবার বেলা একটাতে সমীরণ দত্তের হৃদয্ন্ত্র প্রতিস্থাপন নিয়ে প্রথম বিবৃতি দেবেন চিকিৎসকরা। তখন পরিস্থিতি কিছুটা হলেও আঁচ করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, অন্ধ্রপ্রদেশের যুবক সূর্যনারায়ণ রামু পথদুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। সেখানকার কাঁকিনাড়া অ্যাপেলো হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর ব্রেনডেথ হয়। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন কলকাতার সমীরণ দত্ত। ফর্টিসের এক চিকিৎসকই তাঁকে দেখছিলেন। এর আগে আরও দু'বার হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা হয় তাঁর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কোনও বিশেষ কারণে তা সম্পূর্ণ হয়নি। এবার রামুর ব্রেনডেথের খবর আসতেই ফর্টিসের চিকিৎসকরা প্রস্তুতি নেন। সেইমতো তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। রবিবার রাতেই শুরু হয় অস্ত্রোপচার।

এর আগে চলতি বছরের ২১ মে হৃদযন্ত্রের সফল অস্ত্রোপচার করেছিলেন চিকিৎসক তাপস চৌধুরি। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ঝাড়খণ্ডের দিলচাঁদ সিং। মুখ না খুললেও সমীরণবাবুর পরিবারের আশা তেমনটাই। তবে বেলা একটার আগে চিকিৎসকদের তরফে কিছুই জানানো হবে না।