হয়তো দেরি হবে, জয় তবু আসবে


দীর্ঘ ১৫৬ বছর পরে ন্যায়বিচার পেলাম। তবে লড়াই এখনই শেষ নয়।

১৮৬১ সালে রানি ভিক্টোরিয়ার আমলে এ দেশে ৩৭৭ ধারা চালু করেছিলেন ব্রিটিশ শাসকেরা। পরে দেশ স্বাধীন হলেও আমরা সকলেই স্বাধীন হইনি। হলাম আজ। সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক এই রায়ের পরে। কারণ, স্বাধীন ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী হলেও ধারাটা রেখে দেওয়া হয়েছিল। 

খাজুরাহো-কামসূত্রই প্রমাণ যে, যুগ যুগ ধরে ভারতে সমকামিতাকে মান্যতা দিয়ে এসেছেন আমাদের পূর্বসূরিরা। ব্রিটিশরাও নিজেদের দেশে এই আইন অনেক দিন আগেই ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। কিন্তু আমরা এত দিন ধরে এই ৩৭৭-কে আঁকড়ে ধরে বসেছিলাম। তবে সমকামিতা নিয়ে পুরনো আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মনোভাব থেকেই মনে হয়েছিল যে, এ বার সুদিন আসতে চলেছে। যে দিন প্রকাশ্যে 'আমি আমার মতো' বলার জন্য আইনি চোখরাঙানি সহ্য করতে হবে না আমার মতো সমকামীদের।

তবে আরও বড় লড়াই অপেক্ষা করছে। কারণ, এই রায়ের পরে অনেকেই পরিবার ও সমাজের কাছে আসল পরিচয় তুলে ধরতে চাইবেন। তখনই আসবে বাধা। কারণ, সমকামিতা আইনের চোখে আর 'অপরাধ' না হলেও সমাজ-পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে অনেক সময় লাগবে। তাই যাঁরা এত দিন পরিচয় লুকিয়ে বাঁচছিলেন, সত্যি কথা প্রকাশ্যে বলার শাস্তি হিসেবে তাঁরা ঘরছাড়া হতে পারেন, এমন আশঙ্কাই করছি। সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে গুজরাতে আমার পারিবারিক প্রাসাদের (রাজপিপলা রাজবংশ) এক অংশে ইতিমধ্যেই ঘরছাড়া এলজিবিটি-দের থাকতে দিতে শুরু করেছি। ২০১৯ সালে এই কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা।

আমার পূর্বসূরিরা সাড়ে ৬০০ বছর যুদ্ধ করেছেন। এখন আমি করছি। তবে আমার যুদ্ধ সমাজের বিরুদ্ধে, 'হিপোক্রিট'দের বিরুদ্ধে। আমার বিশ্বাস, দেরি হলেও জয় আসবেই। কারণ, সত্যমেব জয়তে।