সরকার ফেলে দিতে পারে জনতা, মাওবাদীরা নয়, বিদ্বজ্জন গ্রেফতার ইস্যুতে বলল শিবসেনা


মুম্বই: নরেন্দ্র মোদী সরকার ফেলে দিতে মাওবাদীরা ছক কষছে বলে দাবি করে ৫ বাম বিদ্বজ্জনকে গ্রেফতার করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ, এই বিদ্বজ্জনেরা মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে এনডিএ-র অন্যতম দল শিবসেনা।

বিজেপির সবথেকে পুরনো সঙ্গী ও অধুনা বিক্ষুব্ধ শিবসেনা বলেছে, মাওবাদীদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর জীবন বিপন্ন বলে পুলিশ যে দাবি করেছে তা ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব ছাড়া কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট ভাল, তা নিয়ে খামোখা উদ্বিগ্ন হওয়া নিষ্প্রয়োজন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী ও রাজীব গাঁধীর মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা ছিল, যার ফলে প্রাণ হারান তাঁরা। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী এমন ঝুঁকি কখনওই নেবেন না।

দলীয় মুখপত্র সামনার সম্পাদকীয়তে তারা লিখেছে, রাজ্য সরকার যে বলছে, এই মাওবাদীরা কেন্দ্রীয় সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে তা একেবারেই বুদ্ধিহীনতার পরিচায়ক। মনমোহন সিংহের সরকারকে দেশের মানুষই ফেলে দিয়েছিল, মাওবাদী নকশালরা নয়। সাম্প্রতিক কালে শুধু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই সরকারে পরিবর্তন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে তারা। শিবসেনা আরও বলেছে, যদি মাওবাদীদের সরকার ফেলে দেওয়ার মত ক্ষমতা থাকত, তবে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা বা মণিপুরে তাদের ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হত না। তাই পুলিশের উচিত কোনও কিছু দাবি করার আগে আরও সতর্ক হওয়া না হলে বিজেপি ও মোদী আবার উপহাসের পাত্র হবেন।

একই সঙ্গে যাঁরা এই পাঁচ বিদ্বজ্জনকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের সমালোচনা করেছেন, তাঁদেরও আক্রমণ করেছে উদ্ধব ঠাকরের দল। তাদের মন্তব্য, ছত্তিশগড়, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার প্রত্যন্ত সব এলাকায় সক্রিয় আরবান নকশালরা মাওবাদীদের কাজকর্মের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা যোগাচ্ছে। এই সব জায়গায় মাওবাদীরা সমান্তরাল সরকার চালায়, বহু মানুষ, সরকারি কর্মী এমনকী কংগ্রেস নেতা বিদ্যাচরণ শুক্লও তাদের শিকার হয়েছেন। ভীমা-কোরেগাঁও হিংসায় এরাই উসকানি দিয়েছে, এরা চায় প্রতিটি রাজ্যে অশান্তি শুরু হোক, গণতন্ত্র নিয়ে এদের কোনও মাথাব্যথা নেই। এদের চিন্তাভাবনাই হিংস্র বলে শিবসেনা মন্তব্য করেছে।

গ্রেফতার হওয়া পাঁচ বিদ্বজ্জন ভারভারা রাও, অরুণ ফেরেরা, সুধা ভরদ্বাজ, গৌতম নাভলাখা ও ভার্নন গঞ্জালভেসের নাম করে সামনা বলেছে, এঁদের জীবনযাত্রার মান খুবই উঁচু। মাও সে তুং চিনের মানুষ, সেখানে যে সরকার ফেলার চেষ্টা করে, তাকে জেলে পুরে দেওয়া হয় বা স্রেফ নিখোঁজ করে দেওয়া হয়। অথচ এ দেশে কংগ্রেস-এনসিপি, দলিত নেতা-সপা সকলে সমর্থন করে এঁদের। যদি এঁদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থাকে, তবে কী করে এঁরা সমর্থনযোগ্য সেই প্রশ্ন তুলেছে তারা।