যান চলাচল স্বাভাবিক; সচল শিল্পাঞ্চল, বিরোধীদের ডাকা বনধে তেমন কোনও প্রভাব নেই রাজ্যে


শিয়ালদহ, ধর্মতলা, যাদবপুরে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। শিয়ালদহে দূরপাল্লার ট্রেনগুলির অধিকাংশই সময়মতো ঢুকেছে

জ্বালানীর লাগাতার মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিরোধীদের ডাকা বনধে তেমন কোনও প্রভাব এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় লোক কম থাকলেও রাজ্যে বড় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। তবে শিয়ালদহ শাখার বেশ কয়েকটি জায়গায় রেল চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে।

অন্যান্য দিনের মতো আজও শিয়ালদহ, ধর্মতলা, যাদবপুরে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। শিয়ালদহে দূরপাল্লার ট্রেনগুলির অধিকাংশই সময়মতো ঢুকেছে। তবে লোকাল ট্রেনগুলিতে যাত্রীসংখ্যা বেশ কম। যাত্রীদের সুবিধার জন্য স্টেশন চত্বরেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয় সরকারি বাস। ছিল পর্যাপ্ত ট্যাক্সি ও অ্যাপ ক্যাব। যাত্রীদের সাহায্য করার জন্য ছিল পুলিশি প্রহরা।

এদিকে, শিয়ালদহ শাখার লক্ষ্মীকান্তপুরের দক্ষিণ বারাসত স্টেশনে ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।ক্যানিং লাইনেও ট্রেন চালাচল কিছক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে।

বনধে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল কোনও প্রভাবই পড়েনি। সকাল থেকে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও, মায়াবাজার রেল গেটের কাছে কয়েক মিনিটের জন্য ডাউন অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসকে আটকে দেন বনধ সমর্থকরা। তবে রেল পুলিসের হস্তক্ষেপে দ্রুত গন্তব্যে রওনা হয় অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস। বনধে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে জনজীবন স্বাভাবিক। যানবাহন সংখ্যায় কম চললেও সকাল থেকে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল স্বাভাবিক। ট্রেন চলাচলেও কোনও প্রভাব পড়েনি। কারখানায় উপস্থিতির হার অন্য দিনের মতই। দোকান বাজার খুলেছে। স্কুল কলেজেও উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য।

লাগাতার জ্বালানীর মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিরোধীদের ডাকা ভারত ব‍নধের সকালে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে কর্মব্যস্ততা ছিল স্বাভাবিক। অন্যান্য দিনের মতই বিভিন্ন কল কারখানায় স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। বাসগুলিতেও চোখে পড়ার মত ভিড়। ট্রেন পরিষেবাও স্বাভাবিক।

বিরোধীদের ডাকা ভারত বনধের কোনও প্রভাবই পড়েনি বাঁকুড়ায়। অন্যান্য দিনের মত আজ সকাল থেকেও সরকারি ও বেসরকারি বাস পরিষেবা স্বাভাবিক ছন্দে। ট্রেন চলাচলেও কোনও প্রভাব পড়েনি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত।

বিরোধীদের ডাকা ভারত বনধের কোনও প্রভাবই পড়েনি বর্ধমানে। হাওড়া মেইন ও কর্ড লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। বর্ধমান বাস স্ট্যান্ড থেকে নির্ধারিত সময়ে ছেড়েছে দূরপাল্লার সরকারি ও বেসরকারি বাস। শহরের বাস চলাচলেও কোনও প্রভাব নেই। দোকান বাজারও খুলেছে। রাস্তায় অন্যান্য দিনের মতই মানুষের ভিড়। দু নম্বর জাতীয় সড়কেও যান চলাচল স্বাভাবিক।

বিরোদীদের ডাকা ভারত বনধে রাজ্যে কোনও প্রভাবই পড়েনি। তবে সকালের দিকে হাওড়ার দাসনগর মোড় অবরোধের চেষ্টা করেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। যান চলাচল আটকানোর চেষ্টা করলে বনধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিসের ধস্তাধস্তি হয়। এরপর বনধ সমর্থকদের হঠিয়ে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে পুলিস।

হুগলি শিল্পাঞ্চলেও বনধের তেমন েকানও প্রভাব পড়েনি।সকাল থেকে বিভিন্ন জুটমিলে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। মর্নিং শিফটে শ্রমিকদের   উপস্থিতির হার চোখে পড়ার মত। রেল, বাস এবং ফেরি পরিষেবাও স্বাভাবিক।

যাদবপুরে বন্‍‍ধের সমর্থনে বামেরা মিছিল করেছেন। তবে জীবনের ছন্দে তালভঙ্গ হয়নি। এইট বি বাসস্ট্যান্ড থেকে সঠিক সময়েই ছেড়েছে বাস। নিত্যযাত্রী যাঁরা, তারাও সঠিক সময় বাসে চড়েছেন। তফাত্‍ শুধু একটাই। অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে মাথা বাঁচাতে চালকের মাথায় হেলমেট।

উল্লেখ্য, বনধকে সমর্থন জানায়নি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।পেট্রোপণ্যের মূলবৃদ্ধির প্রতিবাদে তৃণমূলও পথে নামবে আজ। মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং মিছিল করবে তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আহ্বান, বনধের বিরোধিতা করে দোকান-বাজার খোলা রাখা হোক। অফিস-কাছারি খোলা রাখারও নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য সরকার। অফিসে না গেলে এক দিনের বেতন কাটা যাবে বলেও রাজ্য সরকারি কর্মীদের,বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে নবান্ন।

জ্বালানি জ্বালায় জ্বলছেন সাধারণ মানুষ। আর সেটাকে সামনে রেখেই এবার ভারত বনধে বিরোধীরা। আজ বনধে সামিল হয়েছে বাম, কংগ্রেস ও জেডিএস। বনধে নৈতিক সমর্থন  জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।  জ্বালানির আকাশছোঁয়া দাম, কৃষিঋণ মকুব ও কৃষকদের ফসলের সঠিক দাম। মূলত এই তিনটি ইস্যুকে সামনে রেখেই এককাট্টা হয়েছেন বিরোধীরা।

কংগ্রেস বাংলায় বারো ঘণ্টার বনধে যাচ্ছে না।  অন্যান্য রাজ্যে কংগ্রেস কংগ্রেস সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত