গ্রামবাসীর বাড়িতে ঢুকে খাবার চেয়েছিল জঙ্গিরা


জম্মু-কাশ্মীরের রিয়াসি জেলায় বৃহস্পতিবার যৌথবাহিনী ও জঙ্গিদের মধ্যে এক প্রবল সংঘর্ষে নিহত তিন জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি। এই সংঘর্ষে জখম হন মোহনলাল নামে এক ডিএসপি-সহ ১২ জন নিরাপত্তাকর্মী। আহতদের মধ্যে রয়েছেন সিআরপিএফের সাত জওয়ান এবং পাঁচজন পুলিশকর্মী। ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ জানা গিয়েছে, সেনার চোখ এড়াতে গ্রামের একটি বাড়িতে আগের দিন রাতে আশ্রয় নেয় জঙ্গিরা৷ সংঘর্ষের পর সেনা আধিকারিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন খোদ ওই বাড়ির মালিক৷
 
তিনি জানান, বুধবার রাত আটটা নাগাদ বলপূর্বক তাঁর বাড়িতে ঢোকে তিন জঙ্গি৷ বন্দুক দেখিয়ে বলে, "গত পাঁচ দিন ধরে আমরা কিছু খেতে পায়নি৷ আমাদের খেতে দাও৷" বাড়ির মালিক আরও জানান যে, এরপর জঙ্গিরা টেবিলে রাখা আপেল ও বিস্কুট খায় এবং তাঁকে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে বলে৷ বাড়ির মালিক গাড়ির ব্যবস্থা করতে অপারগ হলে জঙ্গিরা তাঁকে হুমকি দেয় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে বলে৷ তিনি আরও জানান, এরপর গভীর রাতে তাঁর বাড়ি থেকে চলে যায় তিন জইশ জঙ্গি৷ জঙ্গিরা চলে যেতেই ওই গ্রামবাসী তাঁদের খবর দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার রাতে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে আচমকাই গুলি চালায় জঙ্গিরা। এরপর তারা জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়। গোপন সূত্রে জঙ্গিদের আস্তানার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে সিআরপিএফ, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ দল কাকরিয়াল এলাকার ঝাজ্জার কোটলি জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে। জঙ্গলের কাছাকাছি এলাকার একটি বাড়িতে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের ঘিরে ফেলে যৌথবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে জঙ্গিরা গুলি চালাতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গেই পালটা জবাব দিতে থাকে বাহিনী। এই সংঘর্ষে অচিরেই দুই জঙ্গির মৃত্যু হয়। তৃতীয় জঙ্গি প্রবল লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে। তবে লড়াই বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কিছুক্ষণ পর তৃতীয় জঙ্গিও নিহত হয়। পাশাপাশি ১২ জন নিরাপত্তা কর্মী জখম হন। তাঁদের স্থানীয় কাটরা হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তিন জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গির খোঁজে এদিন ড্রোন ও চপার নিয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।

এলাকায় আর কোনও জঙ্গি আছে কি না তা জানতে চিরুনি তল্লাশি চলছে। জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে থাকা চেকপোস্টগুলিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি ও গাড়ির আরোহীদের তল্লাশি করে দেখা হচ্ছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে স্থানীয় স্কুলগুলি এদিন বন্ধ রাখা হয়েছে।