মেয়ের মুখের খাবার কেড়ে ফেলে দিত বাবা! প্রতিবাদ করায় মাকে খুন


গৃহবধূকে মারধর করে বিষ খাইয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

বজবজের সামপুরের বাসিন্দা শান্তনু দাসের সঙ্গে বছর সাতেক আগে বিয়ে হয় ওরিয়েন্টাল মোড়ের বাসিন্দা শম্পা দাসের। পেশায় কাঠমিস্ত্রি শান্তনুর সঙ্গে বিয়ের পর প্রথম প্রথম বেশ সুখেই কাটে শম্পার। বিয়ের বছরখানেকের মধ্যে দম্পতির এক কন্যাসন্তানও হয়। কিন্তু তারপরই সুখের সংসারে অসুখ দেখা দেয়। বাসা বাঁধে ঘুণপোকা।

শম্পার বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, সন্তান হওয়ার পর থেকেই টাকার জন্য শম্পার উপর অত্যাচার শুরু করে  শান্তনু ও তাঁর বাবা-মা। বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে শম্পাকে। পাশাপাশি, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে শান্তনু। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রথম প্রথম সব অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করতে থাকে শম্পা। কিন্তু দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। বাপের বাড়ি থেকে শম্পার এনে দেওয়া টাকা জুয়া, মদের নেশায় উড়িয়ে দিতে থাকে শান্তনু। শুধু তাই নয়, স্ত্রী শম্পা এবং মেয়েকে খেতেও দিত না শান্তনু। মেয়ের মুখের থেকে খাবার কেড়ে নিয়ে ফেলে দিত বলেও অভিযোগ।

অত্যাচার আর সহ্য করতে না পেরে এরপরই মাস ছয়েক আগে মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান শম্পা। কিছুদিন পর অবশ্য আবার মেয়েকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফেরত পাঠান শম্পার বাপের বাড়ির লোকজন। তাঁরা জানিয়েছেন, অশান্তি এরপরেও কমেনি। অবশেষে শুক্রবার রাতে শান্তনু ফোন করে তাঁদের জানান, 'শম্পা বিষ খেয়েছে।'

শম্পার বাপের বাড়ির লোকেরা জানিয়েছেন, খবর পেয়েই ছুটে যান তাঁরা। গিয়ে দেখেন বিনা চিকিত্সায় শম্পাকে বাড়িতে ফেলে রেখেছে শান্তনু। শনিবার ভোরে মৃত্যু হয় শম্পার। এই ঘটনায় বজবজ থানায় শান্তনু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে শম্পার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই স্বামী শান্তনু দাস ও শ্বশুর, শাশুড়িক গ্রেফতার করেছে বজবজ থানার পুলিস।