বিজেপির বন্‌ধ ব্যর্থ হবেই, দাবি মমতার

কথা ছিল নবান্ন অভিযান। বদলে হল বন্‌ধ। ইসলামপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধের ডাক দিল বিজেপি। শনিবার কলকাতা থেকে বিজেপির বন্‌ধ ঘোষণার খবর পেয়েই ইতালির মিলানে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, প্রশাসন বন্‌ধ হতে দেবে না। সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর আবেদন, ''বিজেপি-আরএসএস-এর প্ররোচনায় পা দেবেন না। ওরা আগুন নিয়ে খেলছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে বন্‌ধের মোকাবিলা করুন।''

মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে অনুপস্থিতি কালীন তাঁর তৈরি করে দেওয়া মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রধান পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানান, বন্‌ধ মোকাবিলায় আজ, রবিবার তৃণমূল ভবনে মন্ত্রিগোষ্ঠী এবং সমস্ত পর্যবেক্ষকদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।

বিজেপির ডাকা বন্‌ধ নিয়ে আপত্তি তুলেছে সিপিএমও। বন্‌ধের পাশে নেই কংগ্রেসও। তবে তারা কেউই সক্রিয় বিরোধিতায় পথে নামবে, এমন এ দিন বলেনি।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ''বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল যা করছে, দেশ জুড়ে বিজেপি ঠিক সেই একই কাজ করছে। ওদের বন্‌ধ ডাকার অধিকার নেই।'' একই সঙ্গে সুজনবাবু জানিয়েছেন, ইসলামপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদে দলের ছাত্র-যুবরা রাস্তায় নেমেছে। তাদের আন্দোলন জারি থাকবে। রাজ্য সরকার যা করেছে, তা ঘোরতর অন্যায়।

কংগ্রেসের সদ্য নির্বাচিত প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র জানিয়েছেন, বিজেপির বন্‌ধকে সমর্থনের প্রশ্ন নেই। কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল ইসলামপুর গিয়েছে। তারা সেখান থেকে ফিরলে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক হবে। উল্লেখ্য, বিজেপির ডাকা বন্‌ধের দিনেই সোমেনবাবুর নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতৃত্ব দিল্লি যাচ্ছেন সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে রাজ্য নিয়ে বৈঠক করতে।

এ দিন দিনভর ইসলামপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিরোধী দলগুলি। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের দাবি, ''রাজ্য জুড়ে অন্তত ১৫০টি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে দলের ছাত্র-যুবরা।'' বিক্ষোভের পাশাপাশি মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত একটি মিছিলও করে বিভিন্ন বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। মিছিল করেছে শ্রমিক সংগঠন সিটুও।

বিজেপির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার রাস্তায় নেমে বন্‌ধ পালন করবেন কর্মীরা। রবিবার একটি প্রতিনিধি দলও যাবে ইসলামপুরে।

বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বন্‌ধের আগের দিন, ২৫ সেপ্টেম্বর সঙ্ঘ পরিবারের সব ক'টি সংগঠন কলকাতায় একটি মিছিলের ডাক দিয়েছে। একই দিনে একাধিক বাম ছাত্র সংগঠন 'রাজভবন অভিযান'-এর ডাক দিয়েছে।