পড়তে চাই, বিয়ে আটকাতে স্কুল-ইউনিফর্মেই থানায় তেরোর ছাত্রী!


ফের রাজ্যে বাল্যবিবাহের ঘটনায় টনক নড়ল পুলিশ-প্রশাসনের। এবারের ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জীবনতলার। নিজেই নিজের বিয়ে আটকাল নাবালিকা। 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ বছরের এক নাবালিকা, স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই জীবনতলা থানায় গিয়ে পৌঁছয়। থানার ইনচার্জের কাছে আকুতি করে, তার বাবাকে বোঝাতে যে, সে পড়তে চায়, বিয়ে করতে চায় না।

ঘটনা জানাজানি হতেই চাইল্ড ওয়েলফেয়ারের কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে নাবালিকার বাড়ি যায়। সেখানে গিয়ে তার বাবাকে বোঝায় যে, বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত কোনও ভাবেই এমন কাজ করতে না।

পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, গত ছ'মাস ধরে ওই শিশুকন্যার জন্য পাত্র খুঁজছিলেন তার বাবা। গত শনিবার ভাঙড়ের চন্দনেশ্বর গ্রামে গিয়ে পাত্রের বাড়িতে পাকা কথা বলে আসে তারা। এর পর মেয়েটি তার বাবাকে অনেক বোঝালেও তারা রাজি হননি। 

শনিবার বিকেলে ক্লাস সিক্সের ওই ছাত্রী স্কুল যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়। এর পর এক বন্ধুর বাড়ি গিয়ে বন্ধুকে তার সঙ্গে পুলিশ স্টেশন যেতে বলে সে। কিন্তু বন্ধুটি স্টেশনে যেতে ভয় পায় বলে একাই চলে যায় মেয়েটি।

প্রায় আড়াই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে স্টেশনে পৌঁছে ওসির সঙ্গে দেখা করতে চায় সে। তার সঙ্গে কথা বলে ওসি চাইল্ড ওয়েলফেয়ারের কর্মীদের ডেকে পাঠান। এর পরই মেয়েটির বাড়িতে যান তাঁরা। রিক্সা চালক বাবা প্রথমে রাজি হতে চাননি। সংসারের বেহাল দশার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে আইনি জটিলতা এবং জেল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পরে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করতে বাধ্য হন তিনি। ওয়েলফেয়ারের কর্মীদের মুচলেকা দিয়ে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।