আমি তো টাকা ফেরত দিতেই চেয়েছিলাম, দাবি সারদা-প্রধানের


বেশ কিছু অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। এই পরিস্থিতিতে সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন বৃহস্পতিবার দাবি করলেন, আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন তিনিও।

এ দিন বারাসতে বিশেষ আদালতে শুনানি শেষে আদালত-চত্বরে সুদীপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, ''আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে আমি প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু টাকা ফেরত না-দেওয়ার জন্য আমার উপরে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। যাঁরা সেই সময় এমন চাপ দিয়েছিলেন, তাঁদের সকলেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মনে হচ্ছে, সারদা-কাণ্ডে সত্য কোনও দিনও উদ্ঘাটিত হবে না।''

সিবিআইয়ের বক্তব্য, তাদের জেরায় সুদীপ্ত বলেছিলেন, সারদার ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার পরে শাসক দলের কিছু প্রভাবশালী নেতা তাঁকে কলকাতা ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে নিষেধ করেছিলেন সেই তাঁরাই। ২০১৩ সালের ১৬ এপ্রিল কলকাতা ছাড়েন সুদীপ্ত। ২৩ এপ্রিল তাঁকে ও দেবযানীকে কাশ্মীরের সোনমার্গে গ্রেফতার করা হয়। সিবিআই অফিসারদের দাবি, সুদীপ্তকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টা আগে পর্যন্ত কিছু প্রভাবশালী নেতা যে তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রেখেছিলেন, তার তথ্যপ্রমাণ তাঁদের কাছে আছে।

আদালতে সারদার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে সারদার মূল হিসেবনিকেশ লেখা বিতর্কিত 'লাল ডায়েরি' বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। সুদীপ্ত ও দেবযানী ধরা পড়ার পরে সেই ডায়েরির কথা জানা যায়। কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি সারদার কাছ থেকে কবে, কখন, কত টাকা নিয়েছেন, সবই নাকি সেই ডায়েরিতে লেখা ছিল। অভিযোগ, অন্য অনেক তথ্যপ্রমাণের সঙ্গে সেই ডায়েরিও উধাও হয়ে যায়। রাজ্য পুলিশ যে-তথ্যপ্রমাণ সিবিআইকে দেয়, তার মধ্যে ওই ডায়েরি ছিল না।

আইনজীবী প্রশ্ন করেন, ডায়েরিটি তিনি কাকে দিয়েছিলেন? দেবযানী বলেন, ''অনেক দিন জেলে আছি। এখন ঠিক মনে করতে পারছি না।'' এক আইনজীবীর ব্যাখ্যা, এর অর্থ, একটি লাল ডায়েরি অবশ্যই ছিল। কারণ, দেবযানী সেই বিষয়টি অস্বীকার করেননি। তবে কাকে সেটি দিয়েছেন, সেটা কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র এ দিন হাজির না-থাকায় বিশেষ আদালতের বিচারক সোমনাথ চক্রবর্তী তাঁর আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করেন। গরহাজির কেন, তা জানতে পরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে মদনবাবু বলেন, ''অসুস্থতার জন্য হাজির হতে পারিনি।''